ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
এক বছরেও উদ্ঘাটন হয়নি সুশান্তের মৃত্যুর রহস্য!
Published : Monday, 14 June, 2021 at 1:00 PM
এক বছরেও উদ্ঘাটন হয়নি সুশান্তের মৃত্যুর রহস্য!১৪ জুন এক বছর পূর্ণ হলো বলিউড স্টার সুশান্ত রাজপুতের ‘আত্মহত্যা’র। কিন্তু এখন পর্যন্ত উদ্ঘাটন হয়নি সুশান্তের মৃত্যুর রহস্য!

২০২০ সালের এই দিনে ওই অভিশপ্ত দুপুরে ঠিক কী হয়েছিল বান্দ্রার কার্টার রোডের মাউন্ড ব্লাঙ্ক অ্যাপার্টমেন্টে? সেই প্রশ্নের উত্তর ঘটনার এক বছর পরেও অধরা।

মুম্বাই পুলিশ প্রথম দিন থেকেই দাবি করে এসেছে— ‘আত্মহত্যা’ করেছেন সুশান্ত। গত বছর আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে সুশান্তের মৃত্যু মামলার ভার যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে।

তবে ১০ মাস পরও সিবিআই স্পষ্টভাবে জানায়নি, আত্মহত্যা নাকি খুন? সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে কি আদৌ কোনো ফাউল প্লে জড়িয়ে রয়েছে? গোটা বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ সিবিআই আধিকারিকদের।

১৪ জুনের ওই কালো দিনে সুশান্তের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন আরও চারজন। প্রয়াত অভিনেতার ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানি, সুশান্তের রাঁধুনি নীরজ এবং দুই পরিচালক কেশব ও দীপেশ সাওয়ান্ত। একাধিক মিডিয়া ইন্টারভিউ এবং সিবিআই ও মুম্বাই পুলিশকে দেওয়া বয়ানে সিদ্ধার্থ পিঠানি ও সুশান্তের রাঁধুনি নীরজ ১৪ জুনের ঘটনাক্রম সম্পর্কে কী জানিয়েছেন, চলুন ফিরে দেখি—

পিঠানির বয়ান— ‘সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে আমি হলে ছিলাম এবং গান শুনছিলাম। সেই সময় সুশান্তের স্টাফ কেশব এসে আমায় জানায়, স্যার (সুশান্ত) দরজা খুলছে না। এর পর আমি এ কথাটা দীপেশকে (সাওয়ান্ত) বলি এবং আমরা দুজনে সুশান্তের ঘরের সামনে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিই, কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ মেলেনি’।

সিদ্ধার্থ পিঠানি এর পর জানান, ওই সময়ই মিতু সিং (সুশান্তের দিদি) তাকে ফোন করে জানায়, তিনি সুশান্তকে ফোন করছেন; কিন্তু জবাব মিলছে না। দরজা ধাক্কা দেওয়া সত্ত্বেও উত্তর না মেলার কথা সিদ্ধার্থ জানান মিতু সিংকে এবং যত দ্রুত সম্ভব সুশান্তের ফ্ল্যাটে পৌঁছাতে বলেন।  

এর পর দীপেশ বিল্ডিংয়ের গার্ডের কাছ থেকে চাবিওয়ালার খোঁজ নেয়।কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া না মেলায় ইন্টারনেট ঘেঁটে মোহাম্মদ রফি নামের এক চাবিওয়ালার নম্বর জোগাড় করে ফোন করেন পিঠানি।

দুপুর ১টার দিকে মোহাম্মদ রফিকে ফোন করেন পিঠানি। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে সেই চাবিওয়ালা এসে জানায়, চাবি তৈরিতে অনেক সময় লাগবে, তাই তালা ভাঙার নির্দেশ দেন পিঠানি।

সেই কথা ফোন মারফত মিতু সিংকেও জানায় সিদ্ধার্থ পিঠানি। সুশান্তের ক্রিয়েটিভ ম্যানেজারের কথায়, তালা ভাঙা হলে রফির প্রাপ্য ২০০০ টাকা দিয়ে তাকে ফ্ল্যাট থেকে বিদায় জানানোর পর, ওই ঘরের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন তিনি ও দীপেশ।

সুশান্ত মামলার অন্যতম বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব পিঠানি আরও বলেন, ঘর অন্ধকার ছিল, বাঁদিকের সুইচ বোর্ডে হাত দিয়ে আলো জ্বালান তিনি। এর পরই দেখেন সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য। সিলিংফ্যানে ফাঁস লাগানো অবস্থায় সুশান্তের দেহ দেখতে পান তারা দুজনে।

অভিনেতার পা দুটো বিছানার একপাশে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল, মুখ জানালার দিকে ছিল। সেই সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে মিতু সিংকে।

ততক্ষণে মিতু সিং সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। তার কথামতোই সুশান্তের নিথর দেহে প্রাণ আছে কিনা দেখার চেষ্টা করেন পিঠানি। সিপিআইয়ের দেওয়ারও চেষ্টা চালায় কিন্তু কোনোরকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এর পর বান্দ্রা পুলিশের একটি টিম অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছায়।

নীরজের বয়ান—

নীরজের কথায় ১৪ জুন দুপুর দেড়টা নাগাদ দুজন তালাচাবি নির্মাতা সুশান্তের ফ্ল্যাটে আসেন। অভিনেতার শোবারঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ইতোমধ্যে অনেকবার ডাকাডাকি করেও ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় চাবিওয়ালাকে ফোন করে ডেকেছিলেন সিদ্ধার্থ পিঠানি। কম্পিউটারাইসড লকের ডুপ্লিকেট চাবি তৈরিতে এক ঘণ্টা সময় লাগবে জেনে চাবিওয়ালাকে বাইরে থেকে লক ভাঙতে বলা হয়। তারা তখন সেইমতো কাজ করেন ও দুই হাজার টাকা দিয়ে সুশান্তের কর্মচারী দীপেশ তাদের বিদায় জানান।

গত বছর আগস্টে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল পিঠানি, নীরজ, কেশব ও দীপেশ সাওয়ান্তকে একটানা জেরার পাশাপাশি ১৪ জু্নরে ঘটনাক্রম পুনর্র্নিমাণও করে একাধিকবার। তবে গোটা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে আজ পর্যন্ত কিছুই জানায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থা।