Published : Tuesday, 15 June, 2021 at 12:00 AM, Update: 15.06.2021 1:42:38 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর: কুমিল্লার চান্দিনায় একটি মশার কয়েল ফ্যাক্টরিতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জ্বালানি গ্যাসের পরিবর্তে অবাধে পুড়ানো হচ্ছে মানবদেহের ক্ষতিকারক কয়লা। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে এলাকাবাসী। প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গত তিন বছর ধরে চান্দিনা পৌর ভবনের ১’শ মিটার দূরত্বে এবং ছায়কোট টিএন্ডটি অফিস সংলগ্ন এলাকায় ‘গাজী ব্র্যান্ড পাওয়ার জাম্বো’ নামীয় একটি ফ্যাক্টরিতে মশার কয়েল উৎপাদন করে আসছে মালিকপক্ষ। ফ্যাক্টরি চালুর শুরু থেকে তারা কয়েল শুকানোর কাজে এলপি গ্যাস ব্যবহার করলেও সম্প্রতি তারা কয়লা ব্যবহার করছে। পুড়া কয়লার ধোঁয়ায় ফ্যাক্টরির আশপাশের এলাকা দূষিত হওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টরি মালিকপক্ষের নিকট এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন সমাধান পায়নি। পরে পৌরসভা মেয়র বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন তারা।
এলকাবাসীর পক্ষে আব্দুর রশিদ জানান, গত ২ বছর আগে নকল ফ্যাক্টরী হিসেবে র্যাব অভিযান চালায় ওই ফ্যাক্টরীতে। ফ্যাক্টরী আসল না নকল সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। তারা গ্যাসের পরিবর্তে কয়লা পুড়িয়ে মশার কয়েল তৈরির কাজ করছে। এলাকাবাসীর পক্ষে তাদেরকে বারবার বলা হলেও তারা আমাদের কোন বাধা-নিষেধ মানছেন না।
ফ্যাক্টরির দেওয়াল ঘেঁষা আল মাদানি জামে মসজিদে আসা মুসল্লিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মসজিদের সাথে ফ্যাক্টরির অবস্থান হওয়ায় প্রতি মুর্হূতে কয়লার ধোঁয়া মসজিদে প্রবেশ করছে। কালো ধোঁয়ায় মুর্হূতের মধ্যে মসজিদের ফ্লোর ময়লা হচ্ছে, এতে করে মসজিদে নামাজ পড়তে এসে বেশ বিপাকে পড়ছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
জানতে চাইলে ফ্যাক্টরির ম্যানেজার নাসির আলম জানান, জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করলে তাতে মুনাফা কম হয়। ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের বেতন দেওয়া কষ্ট হয়ে যায়। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা কয়লা ব্যবহার করছি।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জানান- কয়লার ধুলাবালি ও কার্বণ শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে মানব দেহের ভিতরে ঢুকে ফুসফুসে জমা হয়ে স্থায়ী শ্বাস কষ্ট হয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এ ব্যাপারে চান্দিনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুর রব জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ফ্যাক্টরিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান- বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।