আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি ও মেয়ে তানজিন বৃষ্টিকে হয়রানির অভিযোগে তাদের এক কোটি করে ক্ষতিপূরণ দিতে রায় দিয়েছেন আদালত। ইতিহাদ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ এ ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করবে। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পরবর্তী মাস থেকে ২০ কিস্তিতে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। নারী যাত্রীদের সঙ্গে অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করতে রায়ে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের বেঞ্চের ১৯২ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশিত হয়। রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রায় প্রকাশের বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন। গত বছরের ৮ অক্টোবর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল আংশিক মঞ্জুর করে হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত বলেন, দুজন নারীকে আবুধাবি এয়ারপোর্টে যে ধরনের হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়েছে, তা অর্থদণ্ড দিয়ে পরিমাপ করা যায় না। আদালত ‘নেগলিজেন্স গেস টর্ট’ আইনের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের রায় প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এ ছাড়া আদালত ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেন, যেন জেন্ডার বা শরীরের রং বিবেচনায় ভবিষ্যতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে এ রকম আচরণ করা না হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। ইতিহাদের কান্ট্রি ম্যানেজারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আজমালুল হোসেন কিউসি ও মো. আজিজ উল্লাহ ইমন।
২০১১ সালের ২৮ জুন আবুধাবি এয়ারপোর্টে এ দুই নারীকে হয়রানি/নির্যাতন/আটকের ঘটনা ঘটে। এরপর একই বছর ইতিহাদ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন বাংলাদেশি যাত্রী তানজিন বৃষ্টি। রিটে বিবাদীরা হলেন পররাষ্ট্র সচিব, সিভিল এভিয়েশন সচিব ও চেয়ারম্যান, এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইতিহাদের অপারেশন ম্যানেজার, কান্ট্রি ম্যানেজারসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সহধর্মিণী।