নতুন
করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল
পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩ হাজার ৩১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। সোমবারও মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ এর উপরে ছিল;
শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও ৩ হাজারের বেশি ছিল।
সর্বশেষ ৫৩ দিন আগে
মঙ্গলবারের চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত খবর এসেছিল। গত ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ৬২৯
জনের দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত এক
দিনে নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮ লাখ ৩৩
হাজার ২৯১ জন হয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ২২২ জন।
খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে রোগী শনাক্তের হার বেশি। গত এক দিনে সর্বাধিক ১৫ জন করে ৩০ জন মারা গেছে এই দুই বিভাগে।
সরকারি হিসাবে, আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ২ হাজার ৪৪৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৭১ হাজার ৭৩ জন।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ
পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল
রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন
পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। এ বছর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড
১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৭ কোটি ৬৩ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৮ লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষের।
বাংলাদেশে
গত মার্চের শেষ থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর গতি বেড়ে যায়। কঠোর বিধি-নিষেধের
মধ্যে মে মাসে তা কিছুটা কমলেও সীমান্ত অঞ্চলে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের
সংক্রমণ ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়ছে।
ঢাকা নগরীসহ জেলায়
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৫৫০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর পরে বেশি
শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী (৩৫৩ জন), যশোর (২৪৯), নোয়াখালী (১৯১ জন), খুলনা (১৬৬
জন), চট্টগ্রাম (১৫৮ জন)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায়
সারা দেশে ৫১২টি ল্যাবে ২৩ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত
পরীক্ষা হয়েছে ৬২ লাখ ১৮ হাজার ৯৭৯টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার
বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩
দশমিক ৪০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং
মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ৩০ জন
পুরুষ আর ২০ জন নারী। তাদের ৪৫ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩ জন বেসরকারি
হাসপাতালে মারা যান। একজনকে হাসপাতালে আনার পথে এবং একজন বাসায় মারা গেছেন।
মৃতদের
মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের
মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের
২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন
চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৫ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন
বরিশাল বিভাগের, ৩ জন সিলেট বিভাগের, ১ জন রংপুর বিভাগের এবং ৩ জন ময়মনসিংহ
বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এ পর্যন্ত মৃত ১৩ হাজার ২২২ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৫০৭ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৭১৫ জন নারী।