মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর আরও এক সোর্সকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির কারেন প্রদেশের সীমান্ত শহরে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে গত সপ্তাহে জান্তা বাহিনীর আরেক সোর্সকে অজ্ঞাতরা গুলি করে হত্যা করে। খবর মিয়ানমার নাউয়ের।
খবরে বলা হয়, নিহত মং কিয়াওয়ের মিয়ানমারের বর্ডার গার্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। এছাড়া তিনি পায়াথনজুতে জান্তা বিরোধী দমন-পীড়নে যুক্ত ছিলেন। মং কিয়াওকে বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাতরা গুলি করে হত্যা করে। ৪০ বছর বয়সী এই যুবক মিয়ানমারের পায়াথনজু এবং থ্রি প্যাগোডা এলাকায় সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধীদের নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ এপ্রিল পায়াথনজু এলাকায় অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ বের করে। কিন্তু সেনাবাহিনী উদ্দেশ্যেমূলকভাবে মোটরসাইকেলে বিক্ষোভকারীদের গাড়ি গুড়িয়ে দেয়। সেনাবাহিনী চার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে এবং একজন নারী প্রতিবাদকারীকে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয় আরেকজন জানান, মং কিয়াও সেনাবাহিনীর গাড়ি থেকে অভ্যুত্থানবিরোধীদের মোটরসাইকেল চাপা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এর আগে তাকে চলতি মাসের শুরুতে টার্গেট করা হয়। গত ২ জুন তার বাড়ির পাশে একটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। ওই বোমা বিস্ফোরণের পর, দেশটির বর্ডার গার্ড সদস্যরা তার বাড়ির কাছে অবস্থান নিয়ে গুলি করা শুরু করে। কিন্তু ওই গুলিতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে গত ৯ জুন মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে আয়ে মিন নামে সাবেক স্থানীয় এক প্রশাসককে হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আয়ে মিন সেনাবাহিনীর ‘তথ্যদাতা’ (সোর্স) হিসেবে কাজ করছিলেন। এছাড়া তিনি সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধীতাকারীদের বিরোধী গ্রুপ পিউসাবতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন অং সান সু চির দল এনএলডি বিপুল ভোটে জয় পায়। তবে দেশটির সেনাবাহিনী নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ এনে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান করে। তারা সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাতের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। একই সঙ্গে সু চিসহ দেশটির রাজনৈতিক ও গণতন্ত্রপন্থিদের গ্রেপ্তার করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে।
সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই দেশটির গণতন্ত্রপন্থিরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সেনাশাসনবিরোধী এই বিক্ষোভে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮০০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া সাড়ে চার হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে।