সারাবছর ক্লাস নিতে ‘টিভি চ্যানেল’ খোলার চিন্তা
Published : Friday, 18 June, 2021 at 12:00 AM
সারা বছর শ্রেণিপাঠ দেওয়ার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ‘টেলিভিশন চ্যানেল’ চালুর ভাবনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বৃহস্পতিবার সংসদে তিনি বলেছেন, “সারা বছরই যাতে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার জন্য একটি ডেডিকেটেড চ্যানেল চালুর বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।”
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর গতবছর মার্চে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক দফা চেষ্টা করেও আর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু করা যায়নি।
এর মধ্যে গতবছরের এইচএসসি পরীক্ষা নিতে না পেরে এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ফল দিতে হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই স্কুলের শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়া হয়েছে পরের ক্লাসে।
সংসদ টিভি ও অলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা হলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মত কথা কেউ বলতে পারেননি। সারা দেশে সব শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসে আনাও সম্ভব হয়নি, কারণ এক্ষেত্রে আর্থিক ও কারিগরি সামর্থ্যের বিষয়টি জড়িত।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষাও নেওয়া হচ্ছে।
টিকা দেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠ দেওয়া শুরু হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ে মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
“এই টিকা প্রদানের কর্মসূচি আবাসিক শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুরু হবে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের পর হলসমূহ খুলে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি ক্লাস শুরু হবে।”
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পূরণে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী ‘পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা’ তৈরি এবং তা বাস্তবায়নে কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে একটি ‘গাইডলাইন’ করে দেওয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “করোনা মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক ফিরিয়ে আনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০ হাজার ৪৯৯টি স্কুলের মধ্যে ১৫ হাজার ৬৭৬টি এবং চার হাজার ২৩৮টি কলেজের মধ্যে ৭০০টি কলেজে অনলাইন ক্লাস চালু করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনলাইন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।”
সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ফেরদৌসী ইসলামের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। যেসব জেলায় একটিও বিশ্ববিদ্যালয় নেই, সেখানে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।
সরকারি দলের সহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। নীতিমালার আলোকে যোগ্যতার ভিত্তিতে এমপিওবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হয়ে থাকে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত নয়, তাদের এমপিওভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”