১১বার হজ করেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। ফের হজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল জনপ্রিয় এই অভিনেতার। মক্কা ও মদিনার প্রেমে পাগল উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেছিলেন, সুস্থ থাকলে ফের হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু সেটা অপূর্ণই থেকে গেছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার মেয়ের বাসায় বসে সাংবাদিকদের নিজেই জানিয়েছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান।
২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এ টি এম শামসুজ্জামান। সেদিনও খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সেই রাতে তাঁকে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয়। টানা ৫০ দিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ঐ বছরেরই ১৫ জুন তাঁকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে ২০১৮ সালেওর ২৫ নভেম্বর আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা দেখা গেলে এ টি এম শামসুজ্জামানকে জরুরি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল।
এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর গুজব বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সে গুজবকে পাশ কাটিয়ে দিব্যি বেঁচে ছিলেন। তবে চলতি বছরে ফেব্রুয়ারিতে গুজব ছড়াল না। বিদায় নিলেন আজীবনের জন্য। জীবনাবসান ঘটল এই কিংবদন্তির।
শেষবার যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, 'তখন এই কিংবদন্তি অভিনেতা বলেছিলেন, আমি ১১ বার হজ করেছি, আরো একবার অন্তত যাওয়ার ইচ্ছা আছে।' তবে এই ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে গেল। শরীরের সমর্থন না থাকা, করোনা ভাইরাসের কারণে গোটা পৃথিবীর স্তব্ধ হয়ে যাওয়া- সব মিলিয়ে আর সেটা হয়ে ওঠেনি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই অভিনেতা বারবার বলেছিলেন, 'আমি মক্কা-মদীনার প্রেমে পাগল। আমি যতদিন বাঁইচা থাকুম ততবার মক্কা মদীনায় যামু।'
এ টি এম শামসুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ লেখক ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র আগমন হয় এই অভিনেতার। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি।