নতুন
করে সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দেশে গত এক দিনে আরও ৩ হাজার ৮৮৩ জনের মধ্যে
করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৪ জনের। এক
দিনে মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনে চেয়ে কিছুটা কমলেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
বেড়েছে। কেবল খুলনা বিভাগেই হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সারা
দেশে শনাক্তের হার ১৮ শতাংশে ছাড়িয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে,
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭০ জন হয়েছে। আর করোনাভাইরাসে মৃতের মোট
সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৯ ।
সরকারি হিসাবে,আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ১ হাজার ৯৫৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৪২১ জন।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা আট লাখ পেরিয়ে
যায় গত ৩১ মে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার
৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮
মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১
জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর
খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৭ কোটি ৭৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৮ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি মানুষের।
করোনাভাইরাসের
অতি সংক্রামক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সামাজিক বিস্তার বা কমিউনিটি
ট্রান্সমিশনের কারণে জুনের শুরু থেকে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে
যাওয়ায় সারাদেশে লকডাউনের বিধিনিষেধ এক মাসের জন্য বাড়িয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা নগরীসহ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী
কমেছে। আগের দিনের ৯১৬ জন থেকে কমে ৪৭৩ জন শনাক্ত হয়েছে।
তবে রাজশাহীতে
নতুন রোগীর সংখ্যা ৩৩৪ জন থেকে বেড়ে ৩৫৯ জন, যশোরে ২০৩ জন থেকে বেড়ে ২৯১
জন, চট্টগ্রাম ১৬৯ জন থেকে বেড়ে ২২২ জন, খুলনায় ১৮১ জন থেকে বেড়ে ২২৬ জন
হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইলে ১৪৫ জন এবং কুষ্টিয়ায় ১৫৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত
হয়েছে গত এক দিনে।
বিভাগওয়ারি হিসেবে খুলনায় ১০৩৩ জনের মধ্যে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে, যা সারা দেশে মোট শনাক্তের ২৭
শতাংশ। আগের দিন খুলনা বিভাগে শনাক্ত হয়েছিল মোট ৮১৮ জন।
রাজশাহীতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮১৩ জন থেকে বেড়ে ৮১৮ জন হয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১৩২৮ জন থেকে কমে হয়েছে ৯৪৫ জন।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫২৮টি ল্যাবে ২০ হাজার ৮৮২টি
নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৯টি
নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশে, যা আগের দিন ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ ছিল।
দেশে
এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায়
সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ১২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
ঢাকা
বিভাগে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আগের দিনের ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ থেকে
কমে ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে ১৫
শতাংশ এবং খুলনা বিভাগে ৪০ শতাংশ থেকে কমে ৩৭ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু
চট্টগ্রামে এই হার আগের মতই ১৫ শতাংশের ঘরে রয়েছে।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৫ জনই ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে মারা গেছেন ১২ জন করে
এছাড়া ৮ জন খুলনা বিভাগের, ৫ জন বরিশাল বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
তাদের ৩৫ জন পুরুষ আর ১৯ জন নারী। তাদের ৫১ জন সরকারি হাসপাতালে, ১ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। বাসায় মারা যান ২ জন।
মৃতদের
মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের
মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের
মধ্যে এবং ১ জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। এ পর্যন্ত মৃত ১৩ হাজার ৩৯৯
জনের মধ্যে ৯ হাজার ৬২৩ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৭৭৬ জন নারী।