ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ভর্তি পরীক্ষার বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবারহ এক বছর পরও হয়নি বিচার
Published : Sunday, 27 June, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.06.2021 1:52:14 AM
ভর্তি পরীক্ষার বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবারহ এক বছর পরও হয়নি বিচারতানভীর সাবিক, কুবি ।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক প্রথম বর্ষের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে ১২ তম হওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সরবারহের বিষয়ে এখনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সিন্ডিকেট হতে গঠন করা উচ্চতর তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও দীর্ঘ সময়েও ব্যবস্থা না নেওয়ায় সুষ্ঠু বিচার নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত কমিটি গত বছরের মার্চের দিকে প্রতিবেদন জমা দিলেও এ প্রতিবেদন এখনো সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়নি এবং কোন ব্যবস্থাও নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এত দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর এমন স্পর্শকাতর একটি ঘটনায় কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট অনেকের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ‘বিথ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১২ নভেম্বর এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এরপর ২৯ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘কুবিতে পরীক্ষা না দিয়ে মেধা তালিকায় ১২ তমথ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশিত হলে ভর্তি পরীক্ষায় ঝালিয়াতি হয়েছে এমন শঙ্কার সৃষ্টি হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এ ঘটনায় ৩০ নভেম্বর ‘বিথ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয় রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান, সদস্য পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বজল চন্দ্র মজুমদার এবং সদস্য সচিব ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ এমদাদুল হক। এরপর একই বছরের ৩ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে জানায় জালিয়াতি নয় বরং অন্য এক শিক্ষার্থী ভুল রোল নাম্বার ভরাট করায় পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও ঐ শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় ১২ তম হয়। তদন্ত কমিটি জানায়, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও ২০৬০৫০ রোলধারী সাজ্জাতুল ইসলাম মেধা তালিকায় স্থান পায় কারণ ২০৬১৫০ রোলধারী শিক্ষার্থী আলী মোস্তাকিন ভুলে ওএমআর ফর্মে ‘১থ এর স্থলে ‘০থ পূরণ করে। আর এ ভুলেই পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও অন্য শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় স্থান পায়। তখন অভিযোগ উঠে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন সদস্য  বিভ্রান্তি ছড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে এ তথ্য সরবারহ করে।  এরপর ৫ ডিসেম্বর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সেসময়কার শিক্ষক সমিতি মানববন্ধন করে। পরবর্তীতে ঘটনা তদন্তে সিন্ডিকেটের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক, সহকারী রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরকে সদস্য সচিব,  ম্যানেজম্যান্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আহসান উল্যাহ এবং লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌসকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। এ কমিটি তদন্ত শেষে গত বছরের মার্চের দিকে প্রতিবেদন জমা দেন বলে জানা যায়। এর প্রায় এক বছরেরও বেশি অতিবাহিত হলেও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হতে।  
এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার হতেই কেউ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্টের লক্ষ্যে সাংবাদিকদের কাছে বিভ্রান্তিমূলক ঐ তথ্য সরবারহ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হয়। এ ঘটনায় সিন্ডিকেট হতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রদান হলেও এখন পর্যন্ত তার আলোকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হতাশাজনক। একটি মহল এঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার ড. মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, আমরা অতিদ্রুতই তদন্ত শেষ করে বহু আগে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এ বিষয়টি খুব সম্ভবত এবারের সিন্ডিকেটে যাচ্ছে।