দ্বিতীয়
সংক্রমণের ঢেউয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাওয়ার
পাশাপাশি ১৫ দিনেই এক হাজার রোগীর মৃত্যুতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ১৪
হাজার ছাড়িয়েছে। গত ১১ জুন ১৩ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৬ জুন রোববার এই সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছার তথ্য
আসে।
বছর গড়িয়ে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত এপ্রিলে পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার পর ১০ দিনেই ১ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।
তারপর
এখনই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার ফলে সোমবার থেকে কঠোর
বিধি-নিষেধে দেশ অচল রেখে সংক্রমণ রোখার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে।
শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে, এই সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১৮ কোটিতে।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী
শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়।
এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ অগাস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা।
এরপর
কমে আসে দৈনিক মৃত্যু। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায়
মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর
সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস; মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল।
তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল।
দিনে
মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের
মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা
ছিল একশর ওপরে।
শুক্রবার আবার দৈনিক মৃত্যু শত ছাড়িয়ে ১০৮ এ গিয়ে পৌঁছায়। শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের।
মৃত্যুর
লিঙ্গ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে এই পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তার ৭১
শতাংশই পুরুষ, নারী ২৯ শতাংশের মতো। মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১০ হাজার
৪৩ জন। নারী ৪ হাজার ১০ জন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃতদের ৫৬
শতাংশই ষাটোধ্বর্ব, ২৪ শতাংশের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ২০ বছরের নিচে
বয়সীদের মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে।
ঢাকা
বিভাগে ৭ হাজার ৪৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ৬৭০,
রাজশাহী বিভাগে ৯৬১, খুলনা বিভাগে ১ হাজার ১৩৩, বরিশাল বিভাগে ৪১৪, সিলেট
বিভাগে ৫১৮, রংপুর বিভাগে ৫৬৯, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৯৯ জন মারা গেছে
মহামারীতে।