Published : Sunday, 27 June, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.06.2021 1:52:48 AM
তানভীর দিপু:
কুমিল্লায়
করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৩ দিনে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। এই সময়ের মধ্যে করোনা
আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ২২৮ জন। শনাক্তের হার গড়ে ২০ শতাংশ। সবশেষ গতকাল
শনিবার কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, নতুন
করোনা করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন, যার মধ্যে অর্ধেকই কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশন এলাকার। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্তের হারও ছিলো ১৯ শনাক্তের
বেশি। নতুন ৫৮ জন এই সময়ের মধ্যে করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আর মৃত্যুবরন
করেছেন ২ জন।
এদিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোঃ
মহিউদ্দিন জানান, কুমেক হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে রোগী ভর্তির
সংখ্যা বাড়ছে।
কুমেক করোনা ইউনিটের আইসিউইউ বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম
মুকতাদির চৌধুরী জানান, এখন মূলত তরুণরা করোনা ভাইরাসের বাহক হচ্ছেন-কিন্তু
বিপদে পড়ছেন তাদের সংস্পর্শে আসা বয়স্করা। তার মানে এই নয় যে তরুণরা
বিপদমুক্ত। করোনা ইউনিটে অনেক করোনা আক্রান্ত তরুন রোগী ভর্তি আছেন।
তবে
করোনা ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, আইসিইউতেও বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর
সংখ্যা। আর নতুন করে যারা করোনা ইউনিটে আসছে তারা বেশির ভাগই সংকটাপন্ন
অবস্থায় চিকিৎসা নিতে আসছেন।
কুমিল্লায় করোনার সংক্রমণ উর্দ্ধমুখী হলেও
সাধারাণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে না মোটেও। মাস্ক ব্যবহার না করে ও
স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে জনসাধারনের চলাচল। কোথাও কোথাও হচ্ছে
জনসমাগমও। অসচেতনদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পরিচালিত মোবাইল
কোর্টে গতকাল জরিমানা করা হয়েছে নগরীর বাদুরতলা এলাকার একটি কোচিং
সেন্টারকে। বিধিভঙ্গ করে শিক্ষার্থী পড়ানোর দায়ে ‘ই হক কোচিং’ নামে ওই
প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হ্জাার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। এছাড়া
ধর্মসাগর পাড় এলাকায় আরো একটি দোকানকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জেলা
করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান
জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত কুমিল্লাতে কঠোর মোবাইল কোর্ট
পরিচালিত হবে। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন হবার কোন বিকল্প নেই।
অন্যদিকে
সোমবার থেকে লকডাউন ঘোষনার কথা শুনে গতকাল শনিবার সারাদিন কুমিল্লা নগরীতে
ছিলো মানুষের ভিড়। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে যানজট আর মানুষের ভিড়
লক্ষ্য করা গেছে সারাদিনই। এছাড়া বাজার ও দোকানপাটেও ছিলো ক্রেতাদের ভিড়।
বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি দেখা
যায়। লকডাউনের মধ্যে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মজুদ করতেই এই কেনাকাটা বলে
জানিয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। এদিকে ভিড়ের কারনে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব
যেমন রক্ষা হয়নি তেমনি আরো বেশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছেন
করোনা বিশেষজ্ঞরা।