নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় দশটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বাতিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
রবিবার (২৭ জুন) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এই তথ্য জানান।
বাদ দেওয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে‑ পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মেগাওয়াট সুপার থারমাল পাওয়ার প্লান্ট, মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প, চট্টগ্রাম ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, খুলনা ৫৬৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেষখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেষখালী (২) ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।
কেনো বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছিলাম। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে চলে এসেছে। এখন আমাদের এসব প্রকল্প না আসলেও কোনও সমস্যা হবে না। এই কারণে প্রকল্পগুলো বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে আমরা পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনা করেছি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে আমরা ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করবো। এজন্য স্রেডা একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০১২ সালে ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে দেশে বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যদিও এরপরে চীনের সাথে এক চুক্তির মাধ্যমে পায়রায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। তবে এরমধ্যেই দেশীয় কোম্পানি অরিয়নসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হয়। এছাড়া বিদেশি কোম্পানি মালেয়শিয়া, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুরের কোম্পানির সাথেও নির্মাণের চুক্তি হয়। এদেরকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোম্পানিগুলো কেন্দ্র নির্মাণের অর্থায়ন নিশ্চিত করতে পারেনি। একই সাথে জমির সংস্থান এবং অন্যান্য কাজেও পিছিয়ে ছিল কোম্পানিগুলো। কেন্দ্র নির্মাণের কোনও সম্ভাবনা না থাকায় প্রকল্পগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হচ্ছিল। তাই প্রকল্পগুলো বাতিল করা হয়েছে।