বিদেশে পালানোর চেষ্টাকালে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ধরা পড়েছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের ৬৬ কোটি টাকা গড়মিলের অভিযোগে রয়েছে।
এই অপরাধে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছে ডিএসই। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ব্রিটিশ নাগরিক আবদুল মুহিত মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে দেশত্যাগের চেষ্টা করলে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেন বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, আবদুল মুহিত দেশত্যাগের জন্য বিমানবন্দর যান। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দিয়েছে। সেখান থেকে আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে তাকে আটক করা হয়েছে কি-না সেটি আমি নিশ্চিত না।
বিএসইসি-এর নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারীদের ৬৬ কোটি টাকা গড়মিলের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। মতিঝিল থানায় দুদকের মামলা আছে।
মতিঝিল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসির আরাফাত তিনি বলেন, ‘দুদকের মামলা আমরা দুদকে পাঠিয়ে দিয়েছি। এটি এখন আর আমাদের কাছে নেই। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
বিনিয়োগকারীদের ‘সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্ট’ থেকে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার অর্থ ও শেয়ার আত্মসাতের ঘটনায় বানকো সিকিউরিটিজের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ডিএসই।
তাতে যেসব গ্রাহক শেয়ার বিক্রি করে নগদ অর্থ উঠাতে পারেনি তারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। তবে যাদের বিও হিসাবে শেয়ার আছে, তারা লিঙ্ক অ্যাকাউন্টে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, বানকো সিকিউরিটিজ থেকে যেসব গ্রাহক লিঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অন্য কোনো ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিতে নিজের নামের শেয়ার স্থানান্তর করে নিতে চায় তাদের সহযোগিতা করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
এ বিষয়ে ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, কোম্পানিটির গ্রাহকরা চাইলে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ডিপিতে থাকা নিজ নিজ নামের শেয়ার অন্য কোনো ট্রেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানে লিংক অ্যাকাউন্ট খুলে স্থানান্তরের মাধ্যমে নিয়ে যেতে পারবেন।
এক্ষেত্রে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ফরম ১৬-১ ও ১৬-২ যথাযথভাবে পূরণ করে সিডিবিএল থেকে সংগৃহীত ডিপিএ ৬ রিপোর্টসহ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নিকুঞ্জে জমা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
লিঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে ডিএসইর ইনভেস্টর কমপ্লেইন্টস, আরবিট্রেশন অ্যান্ড লিটিগেশন বিভাগে গ্রাহকদের যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএসই।
এদিকে, গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার পর গত ১৭ জুন ডিএসইর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন।
বৈঠকে সমঝোতার মাধ্যমে বানকো সিকিউরিটিজ কার্যক্রম পরিচালনা করার আশ্বাস দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতেই কোম্পানিটির চেয়ারম্যান দেশত্যাগের চেষ্টা করেন।