তানভীর
দিপু: করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সারা দেশে ঘোষিত কঠোর লকডাউন শতভাগ
সফল ভাবে বাস্তবায়নে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। এছাড়াও
লকডাউন বাস্তবায়নে কুমিল্লায় সেনাবাহিনী ও বিজিবির ১৩টি টিম সার্বক্ষণিক
মাঠে থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল
হাসান জানান, লকডাউন চলাকালে অযাচিত কেউ ঘর থেকে বের হলেই আটক ও শাস্তি
দিবে মোবাইল কোর্ট। এছাড়া নগরীতে বিজিবির চারটি টহল দল ছাড়াও পুরো জেলায়
সেনাবাহিনীর ৯টি টহল দল কাজ করবে। কুমিল্লার ১৭টি উপজেলায় প্রত্যেক
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত মোবাইল কোর্ট ছাড়াও গৌরীপুর, বুড়িচং,
বরুড়া ও লাকসামে থাকবে অতিরিক্ত মোবাইল টিম।নগরীরর কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ,
টমসনব্রীজ ও আলেখারচরেও দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ
সদস্যরা।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এবার আর
কোন ছাড় নয়। সাধারণ মানুষ নিজ থেকে ঘরে না থাকলে প্রশাসন কঠোর হওয়া ছাড়া
কোন উপায় নেই।
এদিকে কুমিল্লায় করোনা পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকেই
যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পুরো জেলাতেই করোনা সংক্রমণের
ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
এলাকার। সংক্রমণের এক তৃতীয়াংশই নগরীতে। সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন
জানান, সংক্রমণ এড়াতে লকডাউনে কুমিল্লা নগরীকে পাশ্ববর্তী উপজেলা গুলো থেকে
সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন করা হবে। এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার আশংকা থাকবে না।
লকডাউনের প্রজ্ঞাপন:
করোনা সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বুধবার
(৩০ জুন) সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা
হয়েছে, দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ
থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌ পথে গণপরিবহন ও যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ
থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শিল্প কারখানা চালু
রাখা থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি
বিবেচনায় আগামী ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে থেকে ৭ জুলাই মধ্য রাত পর্যন্ত
চলাচলে বিধিনিষেধ থাকবে।
শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান (বিবাহত্তোর অনুষ্ঠান, জন্মাদিন,
পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
তবে
আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন; কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক
কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ
স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় কার্যাবলি, বিদ্যুৎ,
পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট
(সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি
নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসসহ
অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের
কর্মচারি ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত
করতে পারবে।