Published : Saturday, 3 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 03.07.2021 12:17:52 AM
তানভীর দিপু:
কুমিল্লায়
লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে অসচেতনদের বিরুদ্ধে পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৩ লাখ
১৭ হাজার ৯৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জেলা জুড়ে ২৯৬ টি মামলায় এই
জরিমানার টাকা আদায় করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ। লকডাউনে কঠোরতা আনতে
৪৩টি মোবাইল কোর্ট টীমের পাশাপাশি পুলিশের ৫২টি, সেনাবাহিনীর ৮টি, আনসার
৬টি, বিজিবি ৩ প্লাটুন এবং র্যাবের ২টি টীম দায়িত্ব পালন করেন। এনিয়ে ২
দিনে প্রায় ৬ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এদিকে শতভাগ লকডাউন
বাস্তবায়নে প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদেরও মাঠে নামার আহ্বান
জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন। তিনি বলেন, প্রশাসনের
কঠোরতায় লকডাউন পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে-তবে শতভাগ সফল করতে সিটি
কর্পোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরদেরও সম্পৃক্ততা খুব প্রয়োজন।
এদিকে
লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল শুক্রবার সকালে রাস্তাঘাট দোকানপাট শুণ্য দেখা
গেলেতা বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রশাসনের সাথে সাধারাণ মানুষের লুকোচুরি
খেলার দৃশ্য চোখ পড়ে। যেখানে মোবাইল কোর্ট বা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা
উপস্থিত থাকনে সেখানে লোকজন বাড়ি থেকে বের হন না বা লুকিয়ে থাকেন।
প্রশাসনের লোকজন চলে গেলেই আবার অসচেতনরা চলে আসে রাস্তায়। এছাড়া বাজার,
মেডিকেল ইমার্জেন্সিসহ নানান অজুহাতে মানুষ বের হচ্ছেন রাস্তায়। শহরে ও
জেলা সদরে প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে লকডাউন পরিস্থিতির উন্নয়ণ ঘটলেও শহরতলী
এবং গ্রামের বাজারগুলোতে এখনো দেখা যায় অসচেতন মানুষের ভীড়। করোনা
পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আশংকা প্রকাশ
করলেও কারো কারো মাঝে যেন বিন্দুমাত্র সচেতনতাই নেই। এদিকে গত এক সপ্তাহে
কুমিল্লায় প্রায় ১ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরন করেছেন
১৭ জন। সে অনুপাতে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৩৩ জন। এদিকে জেলাস্বাস্থ্য বিভাগ
বলছে- কুমিল্লা জেলায় করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকেই ছুটছে। প্রতিদিন
কয়েকগুণ বেশি মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দিচ্ছেন। গত ২৪ ঘন্টায়
৫২২টি রিপোর্টে ১৭০ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২০ জন
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে মোট শনাক্তের ৭০
ভাগই কুমিল্লা সিটি এলাকায়। একই ভাবে মৃত্যুর হারের দিকেও কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশন এলাকা এগিয়ে। সবচেয়ে আশংকার বিষয় যা লক্ষ্য করা গেছে, কুমিল্লা
সিটি এলাকায় অনেক মাঝবয়সী ও তরুণরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করছেন।
দুই মাস আগেও আক্রান্তের দিক থেকে পঞ্চাশোর্ধদের মাঝে সংক্রমণ বেশি দেখা
গেলেও এবার করোনায় তরুণদের আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি দেখা যাচ্ছে।
এদিকে
লকডাউন শতভাগ নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের কঠোর ভাবে মাঠে থাকার জন্য
আহ্বান জানিয়েছেন কুমিল্লা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন। সিভিল সার্জন
জানান, প্রশাসন কঠোর হবার চেষ্টা করছে- যে কারনেই লকডাউন পরিস্থিতি উন্নতি
হয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আানতে জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসলে
সাধারণ মানুষ আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হবে। শতভাগ লকডাউন বাস্তবায়ন করা গেলে
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে আনা যাবে। না হয় পরিস্থিতি খারাপ হবেই।