Published : Saturday, 3 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 03.07.2021 12:18:34 AM
তানভীর দিপু:
সপ্তাহে
কুমিল্লায় প্রায় ১ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরন করেছেন
১৭ জন। সে অনুপাতে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৩৩ জন। এদিকে জেলাস্বাস্থ্য বিভাগ
বলছে- কুমিল্লা জেলায় করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকেই ছুটছে। প্রতিদিন
কয়েকগুণ বেশি মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দিচ্ছেন। গত ২৪ ঘন্টায়
৫২২টি রিপোর্টে ১৭০ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২০ জন
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে মোট শনাক্তের ৭০
ভাগই কুমিল্লা সিটি এলাকায়।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রাপ্ত
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড
ইউনিটে এবং সদর হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে রোগী ভর্তি রয়েছে ধারন
ক্ষমতার বেশি।
সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন জানান, আশংকাজনক হারেই
হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তরা আসছেন। করোনা আক্রান্তদের ভর্তি নিতে
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি নেয়া বন্ধ করা হয়েছে। করোনা
ইউনিটে সিট বাড়ানো হচ্ছে। প্রয়োজনে পুরো সদর হাসপাতালই করোনা ডেডিকেটেড
করা হবে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোঃ মহিউদ্দিন
জানান, শুক্রবার সকালেও মেডিকেলের করোনা ইউনিটে ১৪৪ বেডের জায়গায় ১৪৭ জন
ভর্তি ছিলো। আইসিইউর ৩০ বেডেই রোগী। তারপরও সাধারণ বেডের জন্য রোগীরা আসলে
আমরা ভর্তি রাখছি।
একই ভাবে মৃত্যুর হারের দিকেও কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশন এলাকা এগিয়ে। সবচেয়ে আশংকার বিষয় যা লক্ষ্য করা গেছে, কুমিল্লা
সিটি এলাকায় অনেক মাঝবয়সী ও তরুণরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করছেন।
দুই মাস আগেও আক্রান্তের দিক থেকে পঞ্চাশোর্ধদের মাঝে সংক্রমণ বেশি দেখা
গেলেও এবার করোনায় তরুণদের আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি দেখা যাচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, কোন একটি পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে পুরো পরিবার খুব
তাড়াতাড়িই আক্রান্ত হচ্ছেন। আর বর্তমানে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ যে
পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে- করোনা পরিস্থিতিতে তা এক সপ্তাহ আগের চিত্র যদি
ধরে নেয় হয়, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি জানতে আরো অন্তত আরো ৫ দিন অপেক্ষা
করতে হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে লকডাউনেও ঘর থেকে মানুষের বের
হওয়া বন্ধ করতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে মোবাইল কোর্ট ও
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে। কোথাও কোথাও সাধারণ মানুষ যেন মোবাইল কোর্টের সাথে
লুকোচুরি খেলছে এমন দৃশ্যও চোখে পরে। কুমিল্লা সিটিতে সংক্রমণ হার যেমন
বেশি তেমনি শনাক্তের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। সাধারণ মানুষকে লকডাউন মানাতে
সিটি মেয়র ও কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা আশা করছেন কুমিল্লা সিভিল সার্জন মীর
মোবারক হোসাইন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ
শাহাদাৎ হোসেন জানান, লকডাউন মানাতে কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। মোবাইল
কোর্ট অসচেতন যাকেই পাচ্ছে, তাকেই শাস্তির আওতায় আনছে। মাস্ক ব্যবহারে
অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছে-এটা একটি উন্নতি বলা যায়। তারপরও শতভাগ লকডাউন
বাস্তবায়নে প্রশাসন দিন রাত মাঠে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের সচেতনতা জরুরী।