ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
লকডাউনের পঞ্চম দিন: চলাচল বেড়েছে, দোকানও খুলছে
Published : Tuesday, 6 July, 2021 at 12:00 AM
দেশজুড়ে চলা কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বেড়েছে; কিছু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে দোকানপাটও খোলা হচ্ছে।
সোমবার সকালের দিকে রাজধানীর কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, পল্টন এলাকা ঘুরে গত কয়েকদিনের তুলনায় রাস্তায় প্রাইভেট কার ও লোকজনের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। আবহওয়া ভালো থাকায় রিকশায় যাত্রী পরিবহনও বেশি হচ্ছে।
রিকশা চালকদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। শান্তিনগর মোড়ে কাজের সন্ধানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল একদল দিনমজুরকে, তাদের বেশিরভাগই মাস্ক পরেননি। কারো কারো মাস্ক থাকলেও তা গলায় ঝোলানো।
কারণ জানতে চাইলে রফিক নামে তাদের একজন বললেন, “স্যার গরীব মানুষ। আমাগো করোনা ধরব না। করোনা গরীব মানুষ গো ধরে না। আমরা কাম পাই না। হেই বেয়ান বেলা থেইককা কামের জন্য রাস্তায় বইসা আছি। মাস্ক পইরা কী হইবে?”
শান্তিনগরে বাজার করতে আসা শারমিন আখতার নামে এক গৃহিনী বললেন, বাজারের বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে চান না। এ কারণে তিনি বাজারে ঢোকেননি, রাস্তার পাশ থেকে শাক-সবজি কিনেছেন।
“দেখবেন, ওই সবজি বিক্রেতারাও মাস্ক গলা ঝুলিয়ে রেখে। কিছু বললে বলে সারাক্ষণ মাস্ক পড়ে থাকতে নাকি তাদের ভালো লাগে না।”
কাকরাইল, ফকিরাপুল, পল্টনের রাস্তায় বসানো চেকপোস্টগুলোতে প্রাইভেট কার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।
নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, বাংলামোটর, গ্রিনরোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে আগের কয়েক দিনের তুলনায় রিকশা ও মানুষ দুই-ই বেশি। এসব সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচলও বেড়েছে।
পুরান ঢাকার আজিমপুর, লালবাগ, কেল্লারমোড়, বকশিবাজার ও পলাশীর অলিগলিতে দেখা গেল প্রধান সড়কে মানুষ ও রিকশা আছে বেশ।
আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ এলাকায় রাস্তার পাশের মাছ, সবজি, মুদি দোকানগুলো খোলা রয়েছে। ক্রেতারাও গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন।
আজিমপুর চৌরাস্তা, লালবাগ কেল্লার গেইট এলাকায় পুলিশ আছে, তবে তল্লাশির অত কড়াকড়ি নেই।
রামপুরা, হাজীপাড়া, মালিবাগ এলাকার অলিগলিতে মানুষের আনাগোনা গত কয়েক দিনের চেয়ে বেড়েছে। বিধিনিষেধের মধ্যে পড়ে এমন কিছু দোকানপাটও খোলা হয়েছে। তবে পুলিশের টহল গাড়ি দেখলে দ্রুত ঝাঁপ নামিয়ে দিচ্ছেন দোকানিরা।
এ এলাকার প্রধান ডিআইটি রোডে যান চলাচল অবশ্য আগের কয়েক দিনের মতই কম। সড়কে মালবাহী গাড়ির পাশাপাশি রিকশার আধিক্য দেখা গেছে।
গত কয়েক দিন রাজধানীতে বৃষ্টি ছিল, তবে সোমবার সকাল থেকেই ঝকঝকে রোদ। রামপুরা কাঁচা বাজারে দেখা গেল অনেকেই বাজার করতে বেড়িয়েছেন। মাছ-সবজি এবং মুদি দোকান সকাল থেকেই খোলা।
লকডাউনের পঞ্চম দিনে মানুষের চলাচল বেড়েছে মিরপুরেও। প্রধান সড়ক এবং গলিপথে ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার সংখ্যা ছিল বেশ।
পল্লবী এলাকায় দেখা গেল হেঁটেও অনেকে কাজে যাচ্ছেন। সবার মুখে মাস্কও দেখা যায়নি।
তাজুল ইসলাম নামের এক পোশাক কর্মী বললেন, “যাচ্ছি অফিসে। মাস্ক পরে তো দূরের রাস্তা হাঁটা যায় না। ঘেমে গেছে, তাই পকেটে রেখে দিয়েছি; অফিসে গিয়ে পরব।”
সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী লকডাউনে নিত্যপণ্য ছাড়া সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকার কথা। লকডাউনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ দোকান বন্ধই ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সব ধরনের দোকানই খুলতে শুরু করছে।
মিরপুর ১২ নম্বর এলাকায় ফার্নিচার, বেডিং স্টোর, স্যানিটারি পণ্য, ইলেক্ট্রনিক পণ্য ও কাপড়ের দোকান খোলা দেখা গেল। অনেক দোকানে শাটার অর্ধেক বন্ধ রেখে বিক্রি চলছে।
বিসমিল্লাহ বেডিং স্টোরের মালিক ইমরান চৌকদার বললেন, “কিছু অর্ডার ছিল। সেগুলার কাজ করছি। এতদিন বন্ধ ছিল, আজ খুলছি। চলতে তো হবে। পুলিশ আসলে দোকান অফ করে দেব।“