তালেবানের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে পার্শ্ববর্তী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া সৈন্যদের ফিরিয়ে ফের যুদ্ধে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে আফগান সরকার। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থানত্যাগী ২ হাজার ৩০০ সৈন্যকে ফের দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে।
আফগানিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা এখন তালেবানের দখলে এবং প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন জেলা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। বাদাখশানে তালেবান যোদ্ধারা দ্রুত ওই এলাকার প্রধান শহর ফায়জাবাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তাজিক-সীমান্তবর্তী আফগান ঘাঁটিগুলো থেকে সৈন্য পালানোর ঘটনা ঘটছে। সবশেষ গত রোববার তালেবানের আক্রমণের মুখে প্রায় হাজারখানেক আফগান সৈন্য তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে হামদুল্লাহ মহিব বলেছেন, তাজিকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া সৈন্যরা ফিরে আসছে এবং তারা আবারো ফায়জাবাদের মানুষজনের সেবায় নিয়োজিত হবে। তবে এসব সৈন্যকে কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত নেয়া হচ্ছে তা নিশ্চিত করেননি এ কর্মকর্তা।
স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের তথ্যমতে, বাদাশখান প্রদেশের ২৮টি জেলার মধ্যে ২৬টি দখল করে নিয়েছে তালেবান। এর মধ্যে তিনটি পেয়েছে একপ্রকার বিনাযুদ্ধেই। তালেবানের হামলার মুখে আরেক প্রতিবেশী দেশ উজবেকিস্তানেও বেশ কিছু আফগান সৈন্য আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা বাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকেই সেখানে তালেবানের হামলা বেড়ে গেছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সব সেনা বিদায় নেয়ার কথা রয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান না ছাড়লে ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান। কিন্তু সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই আরও তীব্র হলে আশপাশের দেশ অভিমুখে ফের আফগান শরণার্থীর ঢল নামতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তান সীমান্তের ক্রসিংগুলোতে সতর্কতা জারি করেছে তাজিকিস্তান। গত সোমবার আফগান সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারে বাড়তি ২০ হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। তাজিকিস্তানে বিশাল সামরিক ঘাঁটি থাকা রাশিয়াও বলেছে, আফগানিস্তান সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনে তারাও সাহায্য করতে রাজি।
সূত্র: রয়টার্স