এবারের কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কাণ্ডারি কে? চোখ বন্ধ করেই যখন সবাই লিওনেল মেসির নাম মুখে আনতে যাবেন, তখন চুপ হয়ে যাবেন তারা।
কেননা সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয়ের মহানায়ক দলটির গোলরক্ষক এমিলিয়েনো মার্তিনেজ। তার বীরত্বেই কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে পরাজিত করে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে লিওনেল স্কালোনির দল।
অথচ এই গোলরক্ষককে এর আগে তেমনভাবে চিনত না কেউ। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় দলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় গোলরক্ষক হয়ে থেকেছেন মার্তিনেজ। আর সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে সেই গোলরক্ষকের ওপরই ভরসা রেখেছিলেন কোচ স্কালোনি। কিন্তু কেন?
মার্তিনেজ মূলত অ্যাস্টন ভিলা দলের গোলরক্ষক। যদিও তার ক্যারিয়ার শুরু হয় আর্সেনাল দিয়ে। ২০১২ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আর্সেনাল সিনিয়র দলে ঠাঁই পান। গত বছরই অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দেন মার্টিনেজ।
আর্সেনালে সিনিয়র দলের খেলোয়াড় হয়েও ম্যাচে ঠাঁই পেতেন না তেমন। তাকে ধারে এ ক্লাব ও ক্লাবে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। মার্তিনেজও সুবোধ বালকের কথা শুনতেন। খেলতেন দ্বিতীয় সারির বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে। সঞ্চয় করতেন অভিজ্ঞতা। ভাগ্যের জট যেন খুলছিলই না।
একদিন ভাগ্যের গিট খুলে। আর্সেনালের প্রধান গোলরক্ষক বার্নড লেনো চোট পাওয়ায় তাকে একাদশে রাখা হয়। সুযোগ পেয়েই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেকে প্রমাণ করেন মার্তিনেজ। আর্সেনালের ১৪তম এফএ কাপ জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি।
এমন পারফরম দেখিয়ে অ্যাস্টন ভিলার নজরে পড়ে যান। তাকে দলে টেনে নেয় ক্লাবটি। প্রথম গোলরক্ষকের দায়িত্ব দেয় প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব। সেখানেও অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করেন মার্তিনেজ। নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখেন। সব মিলিয়ে ৩৮ ম্যাচের খেলায় ১৫ ম্যাচে নিজের জালে বল ঢুকতেই দেননি তিনি।
এমন দুর্দান্ত গোলরক্ষককে কে না পেতে চাইবে? আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনির তীক্ষ্ম চোখ পড়ে মার্টিনেজের ওপর। জাতীয় দলে নিয়ে নেন তাকে।
কোপায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে মার্তিনেজের ওপর ভরসা রাখেন কোচ। সেমির মতো মহাযজ্ঞে তাকেই দায়িত্ব দেন গোলপোস্ট সামলানোর। তার প্রতিদানও দিয়েছেন অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক।
ফাইনালের মহারণে নেইমার, পাকুয়েতাদের ম্লান করে দিতে মহাপ্রাচীর হিসেবে মার্তিনেজকেই যে পছন্দ স্কালোনি ও মেসির তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।