করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় গত ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ওই ‘লকডাউনে’ সড়ক-মহাসড়কে পণ্যপরিবহন ব্যতিত সকল গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে অবাধে চলছে সিএনজি অটোরিক্সা। ছুটে চলছে মারুতি, মাইক্রোবাসও। দ্বিচক্রযান মোটরসাইকেল আর আর ত্রি চক্রযান সিএনজি অটোরিক্সায় চড়ে যাত্রীরা ছুটে চলছে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা আবার এক জেলা থেকে অন্য জেলায়।
কঠোর লকডাউনের ৫ম দিন থেকে মহাসড়কের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারী না থাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে সিএনজি অটোরিক্সা, মারুতি এবং মোটরসাইকেল চলাচলে ‘কঠোর লকডাউন’ অকার্যকর বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। অষ্টম দিন (বৃহস্পতিবার) সকালে চান্দিনা বাস স্টেশন এলাকা ঘুড়ে দেখা গেছে, মহাসড়ক যেন নিষিদ্ধ সিএনজি অটোরিক্সার স্টেশন। চান্দিনা বাস স্টেশন থেকে ইলিয়টগঞ্জ, গৌরপুর, দাউদকান্দি এবং ময়নামতি, কুমিল্লায় যাত্রী তুলতে চালকরা প্রতিযোগিতা করছে।
একদিকে মহাসড়কের সকল প্রকার থ্রি হুইলার নিষিদ্ধ অপরদিকে, চলমান লকডাউনে সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ। সবকিছু উপেক্ষা করে মহাসড়কের অবাধে সিএনজি অটোরিক্সার চলাচল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল।
এদিকে, বাস স্টেশন সংলগ্ন এলাকা চান্দিনা পৌর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে চান্দিনা উপজেলায় ৬৮জন আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৫৩জনই চান্দিনা পৌর এলাকার বাসিন্দা।
চান্দিনা পৌর এলাকার বাসিন্দা রাজিব জানান- আমি ঢাকায় চাকুরী করি। বুধবার ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল যোগে ৫শ টাকা ভাড়ায় দাউদকান্দি এবং দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে ২শ টাকা ভাড়ায় সিএনজি অটোরিক্সা যোগে চান্দিনায় আসি।
চান্দিনায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারী ফরিদা বেগম জানান- আমি প্রতিদিন সিএনজি অটোরিক্সা যোগে ৫০ টাকা ভাড়ায় কুটুম্বপুর থেকে চান্দিনায় আসি। আবার সন্ধ্যায় আবারও ৫০ টাকা ভাড়ায় কুটুম্বপুর যাই। গাড়ি বন্ধ থাকায় ১৫ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিতে হচ্ছে।
রাজিব ও ফরিদা’র মতো এমন শতশত যাত্রী মহাসড়কে নিষিদ্ধ ওইসব যানবাহনে করে প্রতিদিনই যাত্রীরা যাতায়াত করছে। এতে প্রশাসনের কার্যত কোন ভূমিকা দেখছ না স্থানীয়রা।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জানান- করোনার ভয়াবহতা রোধে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ করা একান্ত জরুরী। চান্দিনা উপজেলাটি মহাসড়কের সংলগ্ন হওয়ায় যেকোন স্থান থেকে সহজেই যাতায়াত করা সম্ভব। মহাসড়কের সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে করোনার সংক্রামণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়ির ইন-চার্জ (এস.আই) মিঠুন বিশ্বাস জানান- আজই আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এরই মধ্যে ৬টি সিএনজি অটোরিক্সা আটক করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আনিছুর রহমান জানান- আমাদের অভিযানে অনেক থ্রি হুইলার আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করবো।