করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে কঠোর লকডাউনে নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ব্যতিত সকল দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় সরকার। কুমিল্লার চান্দিনায় দোকানের এক সার্টার বন্ধ রেখে অপর সার্টার খোলা রেখে লকডাউন পালন করছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান আসলেই বন্ধ হয়ে যায় পুরো বাজার। অভিযান চলে গেলেই আবারও খুলে বসে ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ দোকান-পাট খোলা রাখায় বাজারগুলোতে মানুষের উপস্থিতিও বেশি।
সরেজিমেন চান্দিনা উপজেলা সদরের বাজারটি ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব কাপড় দোকানই বন্ধ। বাকি সকল দোকান-পাটই খোলা। ইলেক্ট্রনিক, স্যানেটারী, হার্ডওয়্যার, স্টেশনারী, জুয়েলারী, মোবাইল, ঘড়ি থেকে শুরু করে প্রায় সকল দোকানই কোন কোন উপায়ে খোলা রেখে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে।
অনেক দোকানের সার্টার নামানো থাকলেও মালিক বা কর্মচারী দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে। ক্রেতা আসলেই সার্টার খুলে ভিতরে নিয়ে যায়। আবার অনেক দোকানে এক সার্টার খুলেই দেদারসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে চান্দিনা বাজারের একাধিক কাপড় ব্যবসায়ী জানান- ‘লকডাউন কি শুধু কাপড় ব্যবসায়? স্টেশনারী দোকান কি নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান? চান্দিনা বাজারের অধিকাংশ স্টেশনারী দোকান ভ্রাম্যমান আদালতের সামনেই খোলা রেখে চলছে। এগুলো কেউ দেখে না’।
স্থানীয় সচেতন বাসিন্দা মো. মাসুম জানান- ‘কঠোর লকডাউনে যদি এক সার্টার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করা হয়, বা বাজারে এতো মানুষের সমাগম হয় তাহলে সাধারণ লকডাউন কোনটা’?
কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে বাজার কমিটির সভাপতি, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
চান্দিনার মাধাইয়া, মহিচাইল ও নবাবপুর বাজারে লকডাউনের কোন চিহ্ন-ই নেই। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান আসলে তরিঘরি করে সবাই বন্ধ করে। আবার চলে গেলে পুরো দমে চলে তাদের ব্যবসা। বাজারগুলোতে মানুষের তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
অপরদিকে, চান্দিনা পৌর এলাকায় হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনের আক্রান্ত রোগীর দুই তৃতীয়াংশই চান্দিনা পৌর এলাকার বাসিন্দা। ১ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত চান্দিনা উপজেলায় ৯৩জন আক্রান্তের মধ্যে পৌর এলাকাতেই ৬৮জন। সর্বশেষে বৃহস্পতিবার শেষ ২৪ ঘন্টায় চান্দিনায় ২৫জন করোনা সনাক্ত হয়। এর মধ্যে ১৫জনই চান্দিনা পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার জানান- আমরা প্রতিনিয়তই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। আজও (বৃহস্পতিবার) ৪টি মামলায় ৬ হাজার ৮শ টাকা জরিমানা করেছি। এছাড়া সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারাই এসব কাজ করছে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।