টেস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই দিন শেষ করলো বাংলাদেশ
Published : Saturday, 10 July, 2021 at 12:00 AM
হারারে
টেস্টে যে ধৈর্য নিয়ে এত আলোচনা। সেখানে সফলতা দেখালেন মাত্র দুই
জিম্বাবুইয়ান। ব্রেন্ডন টেলর ও অভিষিক্ত তাকুদজাওয়ানশে কাইতানো ছাড়া
প্রতিরোধ গড়তে পারেনি স্বাগতিকদের কেউ। ফলোঅন শঙ্কা তৈরি করে সেই
জিম্বাবুয়েই প্রথম ইনিংসে করতে পারলো ২৭৬ রান। তাতে বড় লিড প্রাপ্তিতে এই
টেস্টের পুরো নিয়ন্ত্রণে এখন বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের দ্বিতীয়
ইনিংসে সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৪৫ রান। সফরকারীরা এগিয়ে গেছে ২৩৭ রানে। ক্রিজে
আছেন সাদমান ইসলাম (২২) ও সাঈফ হাসান (২০)।
অথচ তৃতীয় দিনের শুরুটা
দেখেও ভাবা যায়নি, এভাবে দ্রুত গুঁড়িয়ে যাবে জিম্বাবুয়ে। যেখানে লাঞ্চে
যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২০৯ রান! সেখানে তৃতীয় সেশনেই
দলটি গুটিয়ে গেছে ২৭৬ রানে!
প্রথম সেশনে যে প্রতিরোধ ভাঙা দুষ্কর মনে
হচ্ছিল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশনেই সেটিই হয়ে গেলো ভঙ্গুর! মিরাজ-সাকিবের
দারুণ বোলিংয়েই বেশি দূর যায়নি জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস।
বাংলাদেশের ৪৬৮
রানের পর দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে প্রভাব বিস্তারের পর আজও (শুক্রবার) দাপট
দেখাতে থাকেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। অনেক চেষ্টার পর ব্রেন্ডন টেলরকে
ফেরানো গেছে, তবে সেটা ছিল জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ‘উপহার’। মেহেদী হাসান
মিরাজের বলে উইকেট বিলিয়ে দেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা টেলর। প্যাভিলিয়নে
ফেরার আগে টেলর ৯২ বলে খেলে যান ৮১ রানের ঝলমলে ইনিংস, যাতে ছিল ১২
বাউন্ডারির সঙ্গে ১ ছক্কার মার।
তার বিদায়ে তৃতীয় দিনের লাঞ্চে যাওয়ার
আগে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৬৭ ওভারে ২ উইকেটে ২০৯ রান। টেলর উইকেট বিলিয়ে
দেওয়ার পরও ধৈর্য পরীা নিতে থাকে জিম্বাবুইয়ানরা। বিশেষ করে অভিষিক্ত
কাইতানোর সঙ্গে জুটি গড়তে থাকেন আরেক অভিষিক্ত ডিওন মায়ার্স। দ্বিতীয় সেশনে
৪৯ রান করা এই জুটিটিই ভেঙে দেন সাকিব। উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিরাজের
তালুবন্দি হন মায়ার্স (২৭)।
ব্যাট হাতে হতাশ করা সাকিব ঝলসে উঠেন তাতে।
নতুন বল নেওয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান টিমিসেন মারুমাকেও আর থিতু হতে দেননি।
লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তুলে নেন আরেকটি উইকেট। ১৭ বল খেলা মারুমা বিদায়
নেন রানের খাতা খোলবার আগেই।
পরে তো ভালো লেন্থের বলে নতুন নামা রয়
কায়াকেও পরাস্ত করেন তাসকিন। অফস্টাম্পে পড়া বল খোঁচা মারতে গিয়ে লিটন
দাসের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন কায়া (০)। যা ছিল তাসকিনের ইনিংসের প্রথম উইকেট।
এই তিন উইকেট পতনের পরই এলোমেলো হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং।
অভিষিক্ত
ওপেনার তাকুদযাওয়ানাশে কাইতানো এক প্রান্ত আগলে ব্যাটিং করছিলেন তার পরেও।
এক পর্যায়ে রেকর্ড সেঞ্চুরির কাছেও চলে এসেছিলেন। তাকে ৮৭ রানে দারুণ এক
বলে লিটনের গ্লাভসবন্দি করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মেহেদী মিরাজ।
৩১১ বল খেলা
এই ওপেনারের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। কাইতানোকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের মূল
প্রতিরোধটাই ভেঙে দেন মিরাজ। এর পর আর দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকদের কেউ।
মিরাজ একে একে ফেরান তিরিপানো, নিয়ুচি ও মুজারাবানিকেও। তাতে দারুণ শুরু
করা জিম্বাবুয়ে শেষ দিকে পড়ে যায় ফলোঅন শঙ্কায়ও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই
বাধা ডিঙানো গেছে। সাকিব শেষ উইকেটে এনগারাভাকে তালুবন্দি করালে প্রথম
ইনিংসে স্বাগতিকরা অলআউট হয় ২৭৬ রানে।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া সাকিব ৮২
রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আর মিরাজ ৮২ রানে নিয়েছেন ৫টি। যা তার ক্যারিয়ারের
অষ্টম ৫ উইকেট শিকার। ৪৬ রানে একটি শিকার তাসকিন আহমেদের।