আড়াই হাজার টাকার জন্য ২ সহকর্মীকে হত্যা
Published : Monday, 12 July, 2021 at 12:00 AM
গাজীপুরে পাওনা আড়াই হাজার টাকা না পেয়ে দুই সহকর্মীকে হত্যা করেছেন রাসেল প্রধান (২৫) নামের বেকারির এক শ্রমিক। এ ঘটনায় জড়িত রাসেলসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন রাসেল।
রোববার (১১ জুলাই) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার কিসমত দূর্গাপুর মধ্যপাড়া এলাকার মুনসুর আলীর ছেলে রাসেল প্রধান (২৫) ও বগুড়ার ধুনট থানার শৈলমারী গ্রামের সাইদুর সরকারের ছেলে মো. সৈকত সরকার (২৪)।
জাকির হাসান জানান, গত ৭ জুলাই গাজীপুরের কোনাবাড়ি থানার বাঘিয়ার চরের জনৈক কালাম আজাদের পরিত্যক্ত ইটভাটার পাশের বিলের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত দুই ব্যাক্তির মরদেহ উদ্ধার করে কোনাবাড়ী থানার পুলিশ। এ ঘটনায় ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার উজা বাদী হয়ে মামলা করেন।
পরে গত ৮ জুলাই গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় কোনাবাড়ি, কালিয়াকৈর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন আসামি সৈকত সরকারকে কালিয়াকৈর থেকে আটক করে। পরে শনিবার (১০ জুলাই) সৈকতকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকা-ের প্রধান আসামি রাসেল প্রধানকে গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রাসেল জানান, তিনি, মাহমুদুল হাসান (২০) ও মো. রাকিব হোসেন (১৮) কোনাবাড়ির বাঘিয়া এলাকায় শাহানা বেকারি নামের এক কারখানায় কাজ করতেন। মাহমুদুল হাসান একমাস আগে তার কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা ধার নেন। ধারের টাকা চাইতে গেলে মাহমুদুল টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে মাহমুদুল তার মোবাইল নম্বরটি ব্লক করে দেন।
পরে গত ১ জুলাই রাসেল গাইবান্ধা থেকে কোনাবাড়িতে এসে পাওনা টাকার জন্য মাহমুদুলকে খুঁজতে থাকেন। তাকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। পরে অপর সহকর্মী মো. রাকিবকে দিয়ে মাহমুদুলের সন্ধান পান।
তারা তিনজন একত্রিত হয়ে ৩ জুলাই সন্ধ্যায় মহানগরীর কোনাবাড়ি থানার বাঘিয়ার চরের বিলের কাছে গিয়ে আড্ডা দিতে থাকেন। একপর্যায়ে রাসেল কৌশলে ম্যাজিকের মাধ্যমে টাকা পাওয়া দেখাবেন বলে রশি দিয়ে মাহমুদুল ও রাকিবের দুই পা ও হাত বেঁধে ফেলেন।
পরে মাহমুদুলকে টেনেহিঁচড়ে বিলের পানিতে নিয়ে চুবিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ ঘটনা কারখানার মালিককে বলে দিবে বললে রাকিবকেও সীমানা পিলার দিয়ে মাথায়, বুকে ও পিঠে আঘাত করে হত্যা করেন। পরে দুজনের মরদেহ পানিতে ডুবিয়ে মরদেহের ওপর ঘাস ও লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দিয়ে রাসেল গাইবান্ধায় পালিয়ে যান।