রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের ফাঁস হওয়া এক গোপন নথিতে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ব্ল্যাকমেইল করার সুযোগ রয়েছে মস্কোর কাছে এবং এ কারণেই তারা ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাকে সমর্থন ও জেতানোর জন্য কাজ করেছে। ফাঁস হওয়া নথির বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
ফাঁস হওয়া নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্পকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য সম্ভাব্য সব শক্তি কাজে লাগানো অতীব প্রয়োজনীয়।
এতে আরও তুলে ধরা হয়েছে, ক্রেমলিনের কাছে ট্রাম্পকে ব্ল্যাকমেইল করার মতো উপাদান রয়েছে। এগুলো এর আগে রাশিয়ার ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সফরের সময়কার। নথিতে ট্রাম্পের মস্কো সফরে নির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের বিস্তারিত জানতে পরিশিষ্ট পাঁচ এর পঞ্চম অনুচ্ছেদ দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ওই পরিশিষ্টে কী রয়েছে তা অস্পষ্ট বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্রেমলিনের ফাঁস হওয়া গোপন নথিটি তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র কর্মকর্তা ভ্লাদিমির সিমোনেঙ্কো। এই বিশেষজ্ঞ বিভাগ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশ্লেষণাত্মক পর্যালোচনা ও প্রতিবেদন সরবরাহ করে। বেশিরভাগ এগুলো বিদেশে রুশ গোয়েন্দাদের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়।
নথিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি সিমোনেঙ্কো তার দলের পক্ষ থেকে তিন পৃষ্ঠার একটি নির্বাহী সারাংশ বিতরণ করেন। দুই দিন পর পুতিন পররাষ্ট্রনীতি অধিদফতরের তৎকালীন প্রধান আলেক্সান্ডার মানঝোসিনকে নির্দেশ দেন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার ব্রিফিং আয়োজনের। নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি আরও পর্যালোচনাই বৈঠকের উদ্দেশ্য এবং পাঁচদিনের মধ্যে তা আয়োজন করতে বলা হয়।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিনের দ্বিতীয় তলার সিনেট ভবনের ভেতরে ওইদিন কী আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ও তার গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আত্মরক্ষার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপের জন্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
নথিতে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বি হিলারি ক্লিনটনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, শীর্ষ মার্কিন রাজনীতিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে মিডিয়াকে কাজে লাগানোর।
রুশ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের এক সপ্তাহ পর একটি রুশ গোয়েন্দা সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি (ডিএনসি)-এর সার্ভার হ্যাক করে। ক্লিনটনের নির্বাচনি প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করতে হ্যাক লাখো ব্যক্তিগত ইমেইল ফাঁস করা হয়।