জিম্বাবুয়ের মাটিতে
প্রত্যাশিত জয় দিয়েই ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে
শুরুতে বিপদে পড়লেও লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে বড় স্কোর পায় তামিম ইকবালের দল।
এরপর বল হাতে সবচেয়ে বড় কাজটা সারেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
শিকার করেন ৫ উইকেট। টাইগার পেসাররাও এদিন ভালো বল করেছেন। সম্মিলিত
পারফর্মেন্সে টাইগারদের জয় এসেছে ১৫৫ রানের। এর মাধ্যমে তিন ম্যাচ সিরিজে
বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের পেস
আক্রমণের সামনে বিপদে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৪ রানে মোহাম্মদ
সাইফউদ্দিনের বলে ফিরে যান মারুমানাই (০)। ১৩ রানে ওয়েসলি মাধভেরেকে (৯)
ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান তাসকিন আহমেদ। অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর আর
অভিষিক্ত ডিওন মেয়ার্স হাল ধরার চেষ্টা করেন। তবে ১৮ রান করা মেয়ার্সকে
ফিরিয়ে ৩৬ রানেই জুটির অবসান ঘটান শরীফুল। তিন পেসারের শিকারের পর মঞ্চে
আবির্ভাব সাকিব আল হাসানের।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক
তথা সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলরকে (২৪) তাসকিনের তালুবন্দি
করেন। এর মাধ্যমে তিনি মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের
সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হয়ে যান। এছাড়া রায়ান বার্লকেও (৬) আফিফের
তালুবন্দি করেছেন সাকিব। ১০৫ রানে জিম্বাবুয়ের ৫ উইকেটের পতন হয়। ম্যাচ চলে
আসে বাংলাদেশের মুঠোয়। বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া লুক জঙ্গুই (০) রান-আউট হয়ে
যান। এরপর মুজরাবানিকে (২) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে তৃতীয় শিকার ধরেন
সাকিব।
দ্রুত উইকেট পতনের মাঝেই ৪৭ বলে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন চাকাভা। সেই
চাকাভাকে ৫৪ রানে ফিরিয়ে চার নম্বর শিকার ধরেন সাকিব। তার পঞ্চম শিকার
রিচার্ড এনগ্রাভা (০)। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়েছিলেন টিমিসেন মারুমা। তাঁর
পে ব্যাট করা সম্ভব হয়নি। তাই ২৮.৫ ওভারে মাত্র ১২১ রানে প্যাকেট হয়
জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ পায় ১৫৫ রানের বিশাল জয়। ৯.৫ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে
৫ উইকেট নেন সাকিব। এটা তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় ৫ উইকেট। এর মাধ্যমে সিরিজে
১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তামিম ইকবালের দল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে
নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান তোলে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে কোনো
রান যোগ হওয়ার আগেই ফিরে যান তামিম ইকবাল। ৭ বল খেলে তিনি মুজরাবানির বলে
'ডাক' মারেন। অপর ওপেনার লিটন দাস একপ্রান্ত আগলে রাখার কাজটি করে
যাচ্ছিলেন। কিন্তু সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি। অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান
২৫ বলে ১৯ রান করে মুজরাবানির শিকার হন। বিতর্ক উস্কে একাদশে সুযোগ পাওয়া
মোহাম্মদ মিঠুনও ১৯ রান করে চাতারার শিকার হন।
মোসাদ্দেক ৫ রানে আউট হলে
৭৪ রানে ৪ উইকেটের পতন হয়। লিটন দাসের সঙ্গী হন মাহমুদউল্লাহ। দুজনে মিলে
এগিয়ে নিতে থাকেন দলের স্কোর। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৯৩ রান আসতেই ছন্দপতন।
৫২ বলে এক ছক্কায় ৩৩ রানে লুক জঙ্গুয়ের স্লোয়ার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে
উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ। সেঞ্চুরির কাছে থাকা লিটনের সঙ্গী
হন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ইনিংসের ৪০তম ওভারে মাধভেরের বলে ১ রান নিয়ে তিন অঙ্ক
ছুঁয়ে ফেলেন লিটন।
১১০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে গড়া লিটনের এটা ক্যারিয়ারের
চতুর্থ সেঞ্চুরি। এরপরেই অবশ্য ১০২ রানে তিনি আউট হয়ে যান। ততণে বাংলাদেশের
ইনিং দাঁড়িয়ে গেছে। শুরু থেকেই আফিফ ছিলেন মারমুখী মেজাজে। মিরাজের সঙ্গে
জুটিতে আসে ৫৮ রান। মিরাজ ২৫ বলে ২৫ আর আফিফ ৩৫ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৪৫ করে
আউট হন। তাসকিন (১) রান-আউট হয়ে যান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ
দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ২৭৬ রান। ৩ উইকেট নেন লুক জঙ্গুই। ২টি করে নেন মুজরাবানি ও
রিচার্ড।