পবিত্র ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় বিদ্যালয় মাঠেই চলছে অবৈধ গরুর হাট।
উপজেলার ২৩টি পশুর হাটের মধ্যে ১১টি হাটেরই কোন অনুমোদন নেই। এছাড়া ৩টি বিদ্যালয় মাঠে সপ্তাহে ২দিন চলে ওই গরুর হাট। সেগুলো হলো- উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়নের নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ, জোয়াগ ইউনিয়নের ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ এবং বরকইট ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ।
এর মধ্যে নবাবপুর ও ধেরেরা অস্থায়ী হাট অন্য জায়গা দেখিয়ে সরকারি ভাবে ইজারা নিয়ে পরবর্তীতে বিদ্যালয় মাঠে বসায়। এদিকে শ্রীমন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের হাট ইজারা ছাড়াই জোর পূর্বক চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত চান্দিনা উপজেলায় ৪টি স্থায়ী গরু বাজার রয়েছে। পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষ্যে উপজেলায় আরও ৮টি অস্থায়ী গরুর হাটের ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। স্থায়ী ও অস্থায়ী ১২টি গরু বাজারের স্থলে বর্তমানে চান্দিনায় অন্তত ২৩টি গরুর হাট রয়েছে।
অবৈধ ভাবে হাট চলছে চান্দিনার শ্রীমন্তপুর, ছয়ঘড়িয়া, শুহিলপুর, কালিয়ারচর, গল্লাই-তালতলা, মহিচাইল-ছেঙ্গাছিয়াসহ আরও অন্তত ৫টি। করোনা মহামারিতে সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের অনুমতি না মিললেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ওইসকল হাটে পশু বেচাকেনা হচ্ছে। এতে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
চান্দিনার শ্রীমন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ জানান- ‘কে বা কারা গরুর বাজার বসিয়েছে আমি কিছুই জানি না। শনিবার স্কুলে এসে মাঠে খুঁটি দেখে শুনেছি শুক্রবার নাকি গরুর হাট বসেছিল’। কারা বসিয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান- আমি কিছুই জানি না।
ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম জানান- শুনেছি বিদ্যালয়ের মাঠে গরুর হাট বসিয়েছে।
ধেরেরা গরু হাটের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম জানান- আমরা ধেরেরা মৌজার ৫৫১ দাগে ইজারা নিয়েছি। মাঠের এক পাশে খুঁটি বসাই। যেখানে আমাদের ইজারা আছে। স্কুলের জায়গায় খুঁটি দেইনি।
নবাবপুর গরু বাজার পরিচালনা পর্ষদ সদস্য আশেক এলাহী জানান- নবাবপুরে স্থায়ী গরু বাজার আছে। ঈদের সময় ওই জায়গাতে সংকুলান না হওয়ায় স্কুল মাঠে নিয়ে আসি। ঈদের সময় মাত্র ২টি বাজারই হয় স্কুল মাঠে
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কানিজ আফরোজ জানান- বিদ্যালয় মাঠে গরু বাজার বসানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো এবং যদি কোন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এতে সংশ্লিষ্ট থাকে তার বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার জানান- আমরা ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সরকারি জায়াগায় অস্থায়ী গরুর হাট ইজারা দিয়েছি। কোন বিদ্যালয়ের মাঠে নয়। যারা বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসিয়েছে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়া অনুমোদনহীন গরুর হাট বন্ধে মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।