টিকাদান
বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে সরকার।
সেই সঙ্গে লকডাউন চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। মঙ্গলবার এক সভায়
সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৭ অগাস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কোভিড টিকাদান শুরু হবে।
মহামারীর
দেড় বছরের মধ্যে দেশ যখন সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থায়, লকডাউন দিয়েও যখন
সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানো যাচ্ছে না, তখন করণীয় কী ঠিক করতে এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে
সভাপতিত্বকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের
বলেন, “টিকা দেওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও টিকা দেওয়া
হবে। ৭ অগাস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, “৫০ এর বেশি যাদের বয়স, সেসব রোগী হাসপাতালে
বেশি এবং তারা টিকাও নেননি। এই বয়সীরা অগ্রাধিকার পাবেন।”
কোভিড
নিয়ন্ত্রণে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে গণটিকাদান শুরু হলেও তা এখনও
শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ গ্রামেও পরিস্থিতি নাজুক করে
তুলেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এনআইডি কার্ড নিয়ে যে যাবেন, তাকেই টিকা
দেওয়া হবে।”
যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাদের ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ কোভিড টিকা দেওয়া হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
জনপ্রতিনিধিসহ
সবাইকে টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, “আমরা টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করব। যে টিকা আছে তা দিয়েই শুরু
করব।”
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ
টিকা কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার
প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
কিন্তু
দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সঙ্কটে পড়ে
বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে
যায়।
এরপর চীন থেকে টিকা কেনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়। চীনের উপহার হিসেবে
পাঠানো এবং কেনা টিকা মিলিয়ে মোট ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশ
হাতে পেয়েছে।
এর বাইরে কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার
কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনকেটের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ
টিকা এবং মডার্নার তৈরি ৫৫ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে।
সোয়া কোটি ডোজ
টিকা দেওয়ার পরও সরকারের হাতে বর্তমানে ১ কোটি ডোজের বেশি টিকা রয়েছে
জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বলেস, আগামী মাসের মধ্যেই আরও ২ কোটি ডোজ
টিকা দেশে চলে আসবে। আগামী বছরে ২১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।