কিংবদন্তি লোকসঙ্গীত সাধক হায়দার আলী বয়াতি (৮৫) মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন)।
বুধবার (২৮ জুলাই) ভোরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার গাইয়ার চরগ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন হার্ট ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন হায়দার আলী বয়াতি। অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও তিন নাতিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, কবিয়াল হায়দার আলী বয়াতি বিগত প্রায় ৫০ বছর ধরে বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলে ছুটে বেড়িয়েছেন। এসব এলাকার হাট-বাজার, শহর-বন্দর ও গ্রামীণ জনপদে জারি-সারি, মারফতি, শরিয়তি, পীর মুর্শিদি, আল্লাহ-নবীর (সা.) গুণগান বিষয়ক গান গেয়েছেন। তিনি দেহতত্ত্ব, সূফীতত্ত্ব, মনঃশিক্ষা, মিলন তত্ত্ব, রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদাবলী, পালাগান ও কবি গানের লড়াই দিয়ে ভক্ত-দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করেছেন।
তিনি কিংবদন্তি কবিয়াল কুমিল্লার হারান শীল ও ঢাকার লনী সরকারের সঙ্গে পালাগান ও কবি গানের টানা ২-৩ দিনের লড়াই করে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, ‘হায়দার আলী গুণী শিল্পী ছিলেন।লক্ষ্মীপুরকে অতিক্রম করে সারাদেশেই তার পদচারণা ছিল। বিভিন্ন এলাকায় গান গেয়ে তিনি জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি গান লিখে গাইতেন না, তাৎক্ষণিক গান তৈরি ও গেয়ে ভক্ত-শ্রোতাদের মন জয় করার দারুণ ক্ষমতা ছিল তার।’
তার মৃত্যুতে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনে পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে।