পাকিস্তানে ধর্ষণ বৃদ্ধির জন্য নারীদের ‘স্বল্পবসন’কে দায়ি করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে এবার নিজের এই মন্তব্য পুরোপুরি অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, এমন বোকার মতো কথা কখনো বলিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম পিবিএস নিউজ আওয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ধর্ষণের জন্য একমাত্র ধর্ষণকারী দায়ি। নারী এজন্য কতটা উস্কানি দিয়েছেন কিংবা কী পোশাক পড়েছেন সেটা কোনো বিষয় নয়, ধর্ষণের জন্য পুরোপুরি ধর্ষণকারী দায়ি। কখনোই ধর্ষণের শিকার নারী এজন্য দায়ি নন।
ধর্ষণ নিয়ে করা আগের মন্তব্যের ব্যাপারে ইমরান খান ওই সাক্ষাৎকারে জানান, তার মন্তব্য অন্যভাবে নেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানে ধর্ষণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন বলে সাক্ষাৎকারে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমার সবগুলো সাক্ষাৎকারের ব্যাপারে আমি জানি। ধর্ষণের জন্য ধর্ষিতাকে দায়ি করে বোকার মতো কোনো কথা আমি কখনো বলিনি। ধর্ষণের জন্য সব সময় ধর্ষক দায়ি।
গত মাসে একটি আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেলকে সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ''যদি নারীরা স্বল্পবসন পরেন, তাহলে পুরুষরা রোবট না হলে সেটা তাদের উপর প্রভাব ফেলে। এ খবুই সাধারণ ব্যাপার।''
ইরমান খানের এই মন্তব্যেই বিতর্কের ঝড় উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। পাকিস্তানের সাংবাদিকরাও দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করেছিলেন।
ওই ঘটনার মাস খানেক আগেও পাকিস্তানে বাড়তে থাকা ধর্ষণের ঘটনার কারণ হিসেবে অশালীনতাকে দায়ী করেছিলেন ইমরান। এপ্রিলে ইমরানের সেই মন্তব্যের প্রতিবাদে লিখিত ভাবে তার ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল পাক নাগরিকরদের একটি অংশ।
পাকিস্তানের প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত ছ'বছরে এ জাতীয় ২২ হাজারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পাকিস্তানে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার অত্যন্ত কম। পরিসংখ্যান বলছে মোট ঘটনার ০.৩ শতাংশকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক।