ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
শব্দচয়নে সতর্কতা জরুরি
Published : Friday, 13 August, 2021 at 12:00 AM
জাওয়াদ তাহের   ।।
শব্দের মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে। এটা আল্লাহ তাআলার মহা নিয়ামত। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তিনি (আল্লাহ) তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে।’ (সুরা আর-রাহমান, আয়াত : ৪)
আমরা কথা বলার মাধ্যমে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করি। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় আমাদের শব্দচয়নে বিভ্রাট ঘটে। রাসুল (সা.) আমাদের শব্দচয়নের েেত্র সতর্ক করেছেন। অথচ আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি একদম সাধারণ। তা সত্ত্বেও রাসুল (সা.) আমাদের সতর্ক করেছেন। কারণ শব্দের ব্যাপক প্রভাব আছে। ভালো শব্দের যেমন ভালো প্রভাব আছে, তেমনি মন্দ শব্দের খারাপ প্রভাব আছে। সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, “সাবধান, তোমাদের কেউ যেন এ কথা না বলে, আমার অন্তর ‘খবিস’ হয়ে গেছে; বরং সে বলবে, আমার অন্তর কলুষিত হয়েছে।” (বুখারি, হাদিস : ৬১৮০)
‘খবিস’ শব্দটি সুন্দর অর্থ বহন করে না, তাই রাসুল (সা.) এই শব্দ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। এর স্থলে ‘কালুসাত’ শব্দ ব্যবহার করতে বলেছেন। এর অর্থ আমার অন্তর খারাপ বা কলুষিত হয়ে গেছে।
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা আঙুরকে ‘আল-কারাম’ নামে ডেকো না। কেননা, ‘আল-কারাম’ হলো মুসলিম ব্যক্তি। (মুসলিম, হাদিস : ৫৭৬২)
আঙুরকে ‘কারাম’ নামে ডাকতে নিষেধ করার কারণ হলো, ‘কারাম’ সম্মানিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই এই শব্দ এখানে বর্জনীয়।
রাসুল (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেছেন, তখন মদিনার নাম পরিবর্তন করেছেন। মদিনার আগের নাম ছিল ইয়াসরিব। এর অর্থ দোষ-ত্রুটি। তাই ইয়াসরিব পরিবর্তন করে তিনি নামকরণ করেছেন ‘মদিনা’।
এমনকি রাসুল (সা.) বহু সাহাবির নাম পরিবর্তন করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনে আমর ইবনু আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমার কন্যার নাম রাখলাম ‘বাররাহ’। ওই সময় জাইনাব বিনতে আবু সালামা (রা.) আমাকে বলেন, রাসুল (সা.) এ নাম রাখতে বারণ করেছেন। আমার নাম ‘বাররাহ’ রাখা হয়েছিল। নবীজি (সা.) বলেন, তোমরা নিজেদের পবিত্রতা ঘোষণা কোরো না। (বাররাহ অর্থ ভালো, নেককার ও পূত-পবিত্র) আল্লাহ তাআলা বেশি অবগত তোমাদের মধ্যে কারা পুণ্যবান। অতঃপর তাঁরা বলল, তাহলে আমরা তার কী নাম রাখব? তিনি বলেন, তার নাম রাখো ‘জাইনাব’। (মুসলিম, হাদিস : ৫৫০২)
সতর্ক করা সত্ত্বেও নাম পরিবর্তন না করার তি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার তাঁর দাদা নবী (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তোমার নাম কী? জবাব দিলেন, আমার নাম হাজান। তিনি বলেন, না বরং তোমার নাম ‘সাহল’। (অর্থাৎ তোমার নাম হাজানের পরিবর্তে সাহল রাখো। হাজান অর্থ দুঃখ আর সাহল অর্থ নরম জমিন)। তিনি বলেন, আমার পিতা আমার যে নাম রেখে গিয়েছেন, আমি তা পরিবর্তন করব না। সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, এর ফল এই যে এরপর থেকে আমাদের বংশের লোকদের মেজাজে রুতা ও কর্কশভাব রয়ে গেছে। (বুখারি, হাদিস : ৬১৯৩)