Published : Thursday, 12 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 12.08.2021 1:19:49 AM
তানভীর দিপু:
দীর্ঘ
১৯ দিন লকডাউনের পর ছাড়া পেয়ে গতকাল পুরো কুমিল্লা শহর ছিলো ব্যস্ত। নগরীর
প্রতিটি সড়কে যানবাহানের পাশাপাশি মানুষের ভিড় ছিলো অত্যধিক। বিভিন্ন
বাজার ও শপিংমলগুলোতে ছিলো নগরবাসীর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের চাপের হুড়োহুড়ি।
তবে এতদিন যাবত করোনা সংক্রমনে নিষ্পেষিত হবার পরও যেন সচেতনতা ফিরেনি
সাধারণ মানুষের মাঝে। নগরীর বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে মাস্কবিহীন
মানুষের অবাধ চলাচল। কোথাও কোথাও সমাগম করেই চলছে আড্ডা ও কাজকর্ম। লকডাউন
আর প্রশাসনের কঠোরতায় কুমিল্লায় সংক্রমণের কমে আসা হার এভাবে লাগামহীন চলা
ফেরায় আবারো বেড়ে যাবার আশংকা জানিয়েছেন করোনা প্রতিরোধ সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল
সকালে কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের বাঁধ
ভাঙ্গা চলাচল। গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী উঠানো হলেও যাত্রীরা
যারা আসছেন তাদের অনেকেই অসচেতন। অনেকেই মাস্কবিহীন ভাবেই চলা ফেরা করছেন।
এছাড়া নগরীর কান্দিরপাড়ে রাস্তায় দেখা গেছে, অনেকেই মাস্ক ছাড়া ঘুরোঘুরি
করছেন- যাদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুন। নগরীর অন্যতম ব্যস্ত শপিংমল সাত্তারখান
এবং খন্দকিার শপিং মলের সামনেও ছিলো মাস্কহীন মানুষের চলাচল।
করোনা
প্রতিরোধে কাজ করে যাওয়া একাধিক চিকিৎসক জানান, করোনা সংক্রমণ করে আসাতেই
লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ যেন আবরো নিজের স্বাভাবিক
জীবন যাপনে ফিরে আসে। কিন্তু স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় এসে কেউ যদি
স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে, তাহলে সবার আগেই ওই ব্যাক্তি করোনা সংক্রমিত হবার
সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া তার মাধ্যমে তার পরিবারও আশেপাশের মানুষের
সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা বেশি। করোনার দ্বিতীয় ধাপে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের
সংক্রমণে প্রাণহানির সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি শারীরিক এবং মানসিক ভাবেও
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আক্রান্তরা। এছাড়া কঠোর লকডাউনের কারনে অনেকেরই আর্থিক
অবস্থাও নাজুক। সুতরাং এই ক্ষতিগ্রস্থ পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসতে হলে সবাইকে
ব্যক্তিগতভাবে সচেতন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
এদিকে জেলা সিভিল
সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ কমেআসছে ধীরে ধীরে।
গত ৩০ জুলাই জেলায় করোনা সংক্রমণ হার একদিনে ৪০ শতাংশের উপরে থাকলেও গতকাল
১১ আগষ্ট সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিলো ২৬ শতাংশ। কিন্তু মৃত্যু সংখ্যা চলতি
মাসের দিনগুলোতে ছিলো গড়ে ১০ জনের উপরে। তবে গতকাল জেলায় করোনায় মৃত্যুর
সংখ্যা ছিলো ৪ জন। ১১ আগষ্ট জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুসানে
সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে ২৮২ জন। একদিনে সুস্থ
হয়েছে ৫১৩ জন। এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ২৯৩ জন এবং মোট
সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ৭৭৮ জন। জেলায় এখনো পর্যন্ত মোট মৃত্যু ৮৩৩ জন। তবে
কুমিল্লা জেলায় এপর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৫৩ জনের করোনা নমুনা পরীক্ষা করা
হয়েছে।