আফগানিস্তানের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ভাই হাসমত ঘানির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে তালেবান বাহিনী। এরই মধ্যে ঘানি তালেবানকে সমর্থন জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
কাবুল দখলের পর তালেবানের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালান আশরাফ ঘানি। এর পর তার ভাই হাসমত টুইটারে লেখেন— ‘আফগানিস্তানকে কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা দিতে পারে তালেবানই।’
এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, তালেবান শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন হাসমত।
তবে নিজের ভাই যখন প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তখন হাসমত কেন তালেবানদের পাশে এসে দাঁড়ালেন?
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আশরাফ ঘানি ২০১৪ সালে যখন আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট হন, তখন হাসমতও প্রেসিডেন্ট পদের দাবিদার ছিলেন।
হাসমত শিক্ষিত, সুবক্তা, প্রভাবশালী এবং আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষমতাবান। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার যোগ্যতা নিয়ে কারোর দ্বিমত ছিল না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট লড়াইয়ের আগেই ময়দান থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সেই সময় বলেছিলেন, এর নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। সে বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর তালিকায় তারাই সুযোগ পেয়েছিলেন, যারা হামিদের কাছের লোক ছিলেন। হাসমত কোনো দিনই সেই সারিতে ছিলেন না।
হাসমত নিজেও বলেছিলেন তার নাম বাদ যাওয়ার নেপথ্যে আফগান ‘রাজপ্রাসাদের’ ভূমিকা থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে আর বেশি কথা বাড়াননি। গত কয়েক বছরে সেভাবে খবরেও ছিলেন না সদ্য সাবেক আফগান প্রেসিডেন্টের এই শিল্পপতি ভাই।
হাসমত ঘোরাফেরা করেন বুলেটপ্রুফ লিমুজিন গাড়িতে। থাকেন সাড়ে ২৩ হাজার বর্গফুটের প্রাসাদে।
তালেবানদের সঙ্গেই হাসমতের সখ্য নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছে একটি মহল। তারা হাসমতের নিন্দাও করেছেন। যদিও অন্য একটি মহল মনে করছে, একদা বঞ্চিত হাসমতকে কাছে টেনে দেশের শিক্ষিত সমাজের ভরসা পেতে চাইছে তালেবান। হাসমতের কথা এবং কাজ দুই-ই সেই উদ্দেশ্য সফল করতে পারে।
হাসমতে তাই আপাতত ভরসা রাখছে তালেবান। তালেবানের হয়ে নেটমাধ্যমে একের পর এক টুইট করছেন হাসমত।