Published : Thursday, 26 August, 2021 at 7:37 PM, Update: 26.08.2021 7:44:24 PM
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ধর্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেওয়ায় এক কিশোরীকে ও তাঁর মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লাঠিপিটা করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেন।
মামলার আসামীরা হলেন, কুরছাপ গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে মো. কাউছার আহম্মেদ এবং মো. হাসান এবং দুই পুত্রবধু আনিকা ও নারগিছ আক্তার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ছড়িয়ে পড়া ৩২ সেকেন্ডর ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ধর্ষণচেষ্টার মামলার আসামী মো. হাসানের বড় ভাই কাউছার আহম্মেদ ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে লাঠিপিঠা করছেন। এসময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ওই কিশারীর মা অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর আগে ওই কিশোরী ও তার বাবা জামাল হোসেনকে প্রকোশ্যে মারধোর করে কাউছার ও তার পরিরবার।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ মে বিকাল ৩টায় ওই কিশোরীকে একটি খালি ঘরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় হাসান । এ ঘটনা হাসানের চাচী দেখে ফেললে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় লোকজন এসে ওই কিশোরীকে ঘর থেকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পরদিন ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেন কুমিল্লা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ চেষ্টার একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় হাসানের পরিবার। পরে ওই স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মামলা তুলে নিতে ওই কিশোরীর পরিবারকে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকী দিতে থাকে হাসানের পরিবার। এতেও কোন কাজ না হওয়ায় প্রথমে ওই কিশোরীর বাবাকে পরে ওই কিশোরীকে বেদম মারধোর করেন হাসানের পরিবার। পরে গত ২০আগস্ট দুুপুরে হাসানের বড় ভাই কাউছার ওই কিশোরীর মাকে রাস্তায় পেয়ে প্রকাশ্যে লাঠিপিঠা করে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের শিকার ওই নারী অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নির্যাতনে এ ভিডিওটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক যুবক ফেইসবুকে পোস্ট করলে মুহুর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে বলেন, মো.হাসান আমার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা করে। আমি কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার দায়েররে পর থেকে তা তুলে নিতে কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় হাসানের পরিবার আমাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। মামলা তুলে না নেওয়ায় আমার স্ত্রীকে প্রকোশ্যে লাঠিপিঠা করে। এর আগে আমার মেয়ে ও আমাকেও এভাবে রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে লাঠিপিঠা করেছে। আমার গরিব হওয়ায় আমার বিচারের ডাকে কেউ আসেনি। আমি গ্রামের মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কেউ আমার বিচার কের দেয়নি। পরে কোন উপায় না পেয়ে আমি থানায় এসেছি।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা মো. জামাল হোসেস দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। দোষীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে।