Published : Tuesday, 31 August, 2021 at 12:00 AM, Update: 31.08.2021 12:30:52 AM
তানভীর দিপু:
জাগ্রতমানবিকতার
কো-অরডিনেটর ও কলেজ ছাত্র কুমিল্লা নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড বাসিন্দা মিথুন
ভুঁইয়া (২২) হত্যার বিচারের দাবিতে কুমিল্লার পূবালী চত্বরে মনববন্ধন ও
বিক্ষোভ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার সদস্য, ১৫নং ওয়ার্ডসহ
কুমিল্লা নগরীর সাধারণ মানুষ। সোমবার বেলা ১২টায় মানববন্ধনে সন্তান হত্যার
বিচার দাবীতে পূবালী চত্বরে উপস্থিত ছিলেন মিথুনের বাবা লিটন ভুঁইয়া ও মা ।
এসময় অন্তত ২৫টি ব্যানারে নগরীর পূবালী চত্বর, টাউনহল গেই ও লিবার্টি মোড়ে
মানববন্ধনে অংশ নেয় হাজারো মানুষ। পূবালী চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে মিথুনের
মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার একমাত্র ছেলে। এলাকাতে সবাই ভালো জানতো।
মাদকের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সে খুন হলো। আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো! আমি
খুনিদের বিচার চাই।
নিহত মিথুনের বাবা লিটন ভুঁইয়া বলেন, মিথুন সব সময়ই
মাদকসহ সব ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। আমাদের ওয়ার্ডে মাদকের আগ্রাসন
সবচেয়ে বেশি। মিথুন চেয়েছিলো এসব যেন বন্ধ হয়। আর এজন্যই তাকে প্রাণ হারাতে
হলো। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।
বিসিবির
কাউন্সিলর, কুমিল্লা জেলা ক্রিকেট কমিটির সভাপতি ও জাগ্রত মানবিকতার
উপদেষ্টা সাইফুল আলম রনি মানববন্ধনের সমাপনী বক্তব্যে বলেন, মাদকের
প্রতিবাদ করতে গিয়ে মেধাবী মুখ মিথুন প্রাণ হারিয়েছে। যারাই এই
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায়
আনতে হবে। আজকের এই কর্মসূচিতে উপস্থিতি প্রমান করে কুমিল্লার মানুষ মাদকের
বিরুদ্ধে। আমরাও বলিষ্ট ভাবে জানাতে চাই- হয় মাদক ছাড়ো, নয় কুমিল্লা ছাড়ো।
প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি যেন শুধু ১৫ নম্বর ওয়ার্ড নয় পুরো
কুমিল্লায় যেন মাদকের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থান নেয়।
মানববন্ধনে
জাগ্রত মানবিকতার সমাজ কল্যান সম্পাদক সাইয়েব বাপ্পিসহ অন্যান্য সদস্য ও ১৫
নম্বর ওয়ার্ডের সচেতন নাগরিকরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন শেষে মিথুন
হত্যার বিচারের দাবীতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদানের কথাও জানান
তারা।
উল্লেখ্য, নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ড বজ্রপুর মৌলভীপাড়ার রহিম মিয়ার
ছেলে মিরাজ এবং একই এলাকার রাসেল মাদক কারবারে জড়িত। গত বুধবার (২৫ আগস্ট)
সন্ধ্যায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেওয়ার অজুহাতে চেয়ারম্যান গলির সামনে মিথুন
ভূঁইয়ার বুকে ছুরিকাঘাত করে তারা। পরে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে
উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা তাকে
উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। ওই দিন রাতেই মিথুনকে ঢাকায়
নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার তাকে পূনরায় কুমিল্লায় আনা হয়। পরে আবারও
অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে
শুক্রবার ঢাকা নেওয়ার পথে মিথুনের মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল
থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান, ছুরিকাঘাতের ঘটনায় নিহত মিথুনের বাবা থানায়
একটি মামলা করেন। মিথুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর শুক্রবার
দুপুরে মারা যান। হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মিরাজ ও রাসেল নামে
দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ার
জেরে এই হত্যাকা-। তবে তদন্ত করলে হত্যার মূল ঘটনাটি জানা যাবে।
নিহত
মিথুন নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ড বজ্রপুর মৌলভীপাড়ার চেয়ারম্যান গলি এলাকার লিটন
ভূঁইয়ার ছেলে। মিথুন কুমিল্লার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার
ভলেন্টিয়ার কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে ছিলেন। হত্যাকা-ে জড়িত থাকার ঘটনায়
শুক্রবার বিকেলে পুলিশ মিরাজ ও শরিফুল ইসলাম রাসেল নামে দুই তরুণকে আটক
করেছে। আটকের সময় মেরাজের ঘর থেকে একটি ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ।