Published : Sunday, 5 September, 2021 at 12:00 AM, Update: 05.09.2021 1:25:09 AM
তানভীর দিপু:
শরৎ মানেই দেবী দুর্গার আগমন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার দেরি নেই খুব বেশি। আগামী মাসে ১১ অক্টোবর, বাংলায় আশ্বিণের ২৬ তারিখেই শুরু হবে দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু এর অনেক আগেই শুরু হয়েছে দেবী দূর্গার প্রতিমা তৈরীর আয়োজন। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে গতবছর ভাটা পড়েছিলো বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবে। ছোট ছোট আয়োজনে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতায় শেষ হয়েছিলো দেবী দূর্গার আরাধনা। করোনার আগ্রাসন চললেও পূজাকে সামনে রেখে চলছে প্রতিমা তৈরী ধুম। কুমিল্লা নগরীর প্রতিমা কারিগরদের আস্তানায় বেড়ে গেছে ব্যস্ততা। লকডাউন উঠে যাওয়ায় গত কয়েকদিনে হঠাৎ করেই বেড়েছে প্রতিমার চাহিদা। একসাথে এত প্রতিমা তৈরী নিয়ে হিমশিমই খেতে হচ্ছে কারিগরদের। কাউকে আবার ফিরিয়েও দিতে হচ্ছে। দামে না মেলায় অনেকেই ছোট আকৃতির প্রতিমা বানানোর জন্যও বলছেন কারিগরদের। তবে সাধারণ মানুষের চাহিদার জোয়ার ভাটায় প্রতিমার কারিগররা লাভ-ক্ষতির হিসেব মেলাতেও হিমশিম খাচ্ছে। করোনার বাহানায় ছোট ছোট প্রতিমার অর্ডার থাকলেও কাঁচামালের খরচ কমেনি খুব বেশি, তাই অনেককেই সমান-সমান দামে প্রতিমা তৈরি করে দিচ্ছেন কারিগররা।
নগরীর ঠাকুরপাড়ার কালীগাছতলা মন্দিরের আঙিনায় রমেশ পালের প্রতিমা বানানোর কারখানা। প্রতিবছরই ঢাকার বিক্রমপুর থেকে এসে এখানে প্রতিমা বানিয়ে বিক্রি করেন কুমিল্লা নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায়। রমেশ পাল জানান, অন্যান্য বছর পূজা শেষ হবার সাথে সাথেই অনেকেই অর্ডার করে দেয় প্রতিমার জন্য। কিন্তু গতবার করোনার কারনে এই দুই বছর সব এলামেলো। অনেকেই ভেবেছিলো পূজায় লকডাউন থাকবে, যে কারণে অনেকেই আগে থেকে প্রতিমার কথা বলেন নি। এবার লকডাউন ছেড়ে দেয়ায় হুট করে অনেকেই প্রতিমা বানানোর কথা বলছেন। এত অল্প সময়ে প্রতিমা বানানো খুব কষ্টকর।
রমেশ পাল আক্ষেপ করে জানান, সবাই কম দামে প্রতিমা চান। গতবার যে প্রতিমা ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, সেটা দাম দিতে চাচ্ছে ১৫ হাজার টাকারও কম। কিন্তু প্রতিমা বানানোর কাঁচামালের দাম তো কমেনি। যে সুতলির দাম ছিলো ৯০ টাকা কেজি , তা এখন ১২০ টাকা।
একই সাথে কাজ করতে থাকার মাটির কারিগর সুকুমার রায় জানান, অন্যান্যবার সময় নিয়ে কাজ করা যায়। এবার হুট করেই প্রতিমার চাহিদা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি সময় মত সবাইকে প্রতিমা বুঝিয়ে দিতে। লকডাউন থাকুক আর না থাকুক প্রতিমা সময় মত মন্ডপে যাবে। তবে সবাই যেভাবে করোনার বাহানায় দাম দিতে চায়- তাহলে আমরা কি করবো।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাল জানান, গতবার ৭২৯ টি মন্ডপে পূজা হয়েছে। এবার পূজার মন্ডপ আরো কমতে পারে। করোনার কারণেই পূজার আয়োজনগুলো সংক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে। তবে আমরা সরকারি নির্দেশনায় করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপনের।