মাদ্রাসা ফান্ডের ২৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
Published : Sunday, 5 September, 2021 at 12:00 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর: কুমিল্লার চান্দিনায় একটি মাদ্রাসা তহবিলের ২৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। চান্দিনা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা সুহিলপুর ইউনিয়নের বড়ইয়াকৃষ্ণপুর আল-আমিন ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিটক লিখিত আবেদন করেন মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য।
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, হিসাব রক্ষক ও একজন সহকারি শিক্ষকের নামও উঠে এসেছে। আত্মসাত করা ২৮ লক্ষ টাকার মধ্যে ৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে মাদ্রাসা তহবিলে ফেরত দিয়ে অভিযুক্তরা।
জানা যায়- ১৯৭৪ সালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা ও পাশ্ববর্তী চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বড়ইয়াকৃষ্ণপুর গ্রামে কাজী আব্দুল আউয়াল নামের একজন স্কুল শিক্ষক ওই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৪ সালে মাদ্রাসাটি এমপিও ভ‚ক্ত হয়।
২০১৭ সালে মাদ্রাসার নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পর মাদ্রাসা তহবিলে জমাকৃত স্থানীয় বিত্তবান, সমাজ সেবক ও দাতাদের অনুদান, শিক্ষার্থীদের বেতন, ফিসহ মোটা অঙ্কের অনিয়ম নজরে আসে।
২০১৮ সালে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ। ওই তদন্ত কমিটি ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৮ লক্ষ টাকার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার হিসাব পায়। বাকি ২৮ লক্ষ টাকার কোন হিসাব দিতে পারেনি মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, হিসাব রক্ষক।
সরেজমিনে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত অভিবাবক সদস্য কাজী আতিকুর রহমান জানান- আমাদের তদন্তে মাদ্রাসার ২৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের সাথে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, একজন সহকারি শিক্ষক ও হিসাব রক্ষক জড়িত। পরে মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার জন্য সময় নেন। তারপর হিসাব রক্ষক জহিরুল ইসলাম মুন্সি বিভিন্ন ধাপে ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার, সহকারি শিক্ষক নূরুল ইসলাম ১ লক্ষ এবং মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাও. আব্দুর রব ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা আদৌ ফেরত দেননি।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার হিসাব রক্ষক জহিরুল ইসলাম মুন্সি জানান- আমি এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছি। এ ঘটনার সাথে আমি এক জড়িত না। তাদের হিসাবের সাথে আমার হিসাব মিলে নাই।
মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাও. আব্দুর রব এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি কাজী মোখলেছুর রহমান জানান- বিষয়টি আমার দ্রæত সমাধান করার চেষ্টা করেছি।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুন নাহার জানান- আমার কাছে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের জন্য দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।