মিয়ানমার জান্তার বিরুদ্ধে ‘জনতার প্রতিরোধ যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে দেশটির ছায়া সরকার। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দুয়া লাশি লা ফেসবুকের এক ভিডিওতে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব থেকে জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ‘জনতার প্রতিরোধ যুদ্ধ’ শুরু করেছে। এটি একটি গণবিপ্লব। তাই মিয়ানমারের সব নাগরিক দেশের প্রতিটি প্রান্তে মিন অং হ্লেইং-এর নেতৃত্বাধীন ‘সামরিক সন্ত্রাসীদের’ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে।
ভিডিওবার্তায় দুয়া লাশি লা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তোলেন এবং তাদের ওপর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে ‘অবিলম্বে আক্রমণ’ করার আহ্বান জানান। পিডিএফ (পিপলস ডিফেন্স ফোর্স) সদস্যদের যার যার এলাকায় সামরিক জান্তা ও এর সম্পত্তিতে হামলা চালানোরও নির্দেশ দেন মিয়ানমার ছায়া সরকারের প্রধান।
এছাড়া, জান্তা সরকারের নিয়োগ দেওয়া আমলাদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানান এনইউজি নেতা। পাশাপাশি, সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্যদের ‘জনগণের সঙ্গে যোগ দিতে এবং জনতার শত্রুদের আক্রমণ করতে’ আহ্বান জানান দুয়া লাশি লা।
তিনি বলেন, সামরিক কাউন্সিলের অধীনে যত বেসামরিক কর্মচারী রয়েছেন, আজ থেকে আপনাদের অফিসে যেতে নিষেধ ও সতর্ক করছি। আমরা মিন অং হ্লেইংকে অপসারণ করে মিয়ানমার থেকে স্বৈরশাসন উৎখাত করবো এবং একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করবো, যা সব নাগরিকের সমান অধিকার সুরক্ষিত করবে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল লি ফর ডেমোক্র্যাসি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পরপরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে চড়াও হয় সামরিক সরকারও। এতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ, বন্দি হয়েছেন কয়েক হাজার।
এ অবস্থায় জান্তাকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে একটি ছায়া সরকার গড়ে তোলেন মিয়ানমারের রাজনীতিবিদরা, যার বেশিরভাগ সদস্যই এনএলডির। জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) নাম দিয়ে এটিকেই মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলে দাবি করেন তারা। অবশ্য মিয়ানমার জান্তা এনইউজি’কে ‘সন্ত্রাসী’ বলে ঘোষণা দিয়েছে। যার অর্থ, তাদের সঙ্গে যে কেউ আলাপ করলে বা যোগাযোগ রাখলেই বন্দি হতে পারেন।
সূত্র: আল জাজিরা