বাংলাদেশের
সামগ্রিক উন্নয়ন-অর্জনের পেছনে জনগণের সঙ্গে থেকে যে মানুষটি অধ্যবসায়ের
সঙ্গে নিরলস শ্রম দিয়ে চলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দীক্ষা
কল্যাণমন্ত্রে, যে কারণে উন্নয়নের ব্রত সাধনায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রাখেন
সর্বক্ষণ। দেশের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ
করেছেন। আর তারই স্বীকৃতিস্বরূপ পেলেন ‘এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি অর্জনের পথে বাংলাদেশের সাফল্যের
স্বীকৃতি এই অ্যাওয়ার্ড। টেকসই উন্নয়নবিষয়ক নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক
সম্মেলনের অংশ হিসেবে সোমবার নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ সম্মাননা
তুলে দেওয়া হয়। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা
‘মুকুট মণি’ আখ্যায়িত করেছে আর্থ ইনস্টিটিউট, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়,
গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্টস প্র্যাকটিস এবং ইউএন সাসটেইনেবল
ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক।
গত সোমবার টেকসই উন্নয়নের ওপর নবম
বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে বাধাগ্রস্ত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা
এসডিজি ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হলে একটি বৈশ্বিক পরিকল্পনা নেওয়া
প্রয়োজন। এসডিজি অর্জনের পথে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি সাহসী ও উচ্চাভিলাষী
বৈশ্বিক রোডম্যাপ প্রণয়ন করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে পাঁচ দফা প্রস্তাব করেন
তিনি। এই প্রস্তাবের শুরুতেই তিনি বলেছেন, বিশ্বের সব জায়গায়
করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি। দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি
দেশগুলোর সম্পদের বিশাল ব্যবধান কমিয়ে আনার কথা বলেছেন। বিশ্বব্যাপী যে
দারিদ্র্য বাড়ছে, তা থেকে উত্তরণের চেষ্টায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক
সুরক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব
দিতে বলেছেন। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলার কথা
বলেছেন চতুর্থ প্রস্তাবে। আর পঞ্চম প্রস্তাবে এসডিজি বাস্তবায়নে
পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা কার্যক্রম আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস
নেটওয়ার্ক গত জানুয়ারিতে ২০২১ সালের যে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে,
তাতে দেখা যাচ্ছে এবারের এসডিজি সূচকে বিশ্বের ১৬৫টি দেশের মধ্যে
বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। চার বছর আগে ২০১৭ সালের সূচকে ১৫৭টি দেশের মধ্যে
১২০তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এসডিজি সূচকে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর এবার
১০০-এর মধ্যে ৬৩.৫। গত বছর এই স্কোর ছিল ৬৩.২৬, তার আগের বছর ছিল ৬৩.০২।
করোনা
মহামারির সময় বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক দেশেই
সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এমন একটি সময়ে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার এসডিজি উন্নয়ন পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য অর্জন।
এটা যেমন শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের স্বীকৃতি, তেমনি দেশের জন্য এক বিরল
সম্মান।
বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন
দেশের প্রধানমন্ত্রী। কল্যাণমন্ত্রে তাঁর দীক্ষা। উন্নয়নের ব্রত সাধনায়
তিনি নিজেকে সর্বক্ষণ নিয়োজিত রেখেছেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে সব সংকট
মোকাবেলা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাকে অভিনন্দন।