চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে চাঞ্চল্য প্রিয়া হত্যার ঘটনায় মায়ের পরকীয়ায় শেষ হলো সুখের সংসার। মাকে হারিয়ে ছটপট করতে থাকা ১৮ মাস বয়সী শিশু আবরিন জামান উম্মে আনহার। নওরোজ আফরিন প্রিয়া খুন হওয়ার পর আশ্রয় নিয়েছিলো নানী তাহমিনা সুলতানা রুমির কোলে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ কন্যা হত্যাকান্ডের মূলহোতা হিসেবে রুমি কারাগারে চলে গেলে নানীর মুখের পানে চেয়ে থাকা আনহারের শেষ আশ্রয়টুকুও হারিয়ে যায়। মা ও নানীর মুখচ্ছবি খুঁজে বেড়ানো শিশুটির দেখভালের দায়িত্ব নেন বাবা কাইরুজ্জামান হৃদয় চৌধুরী ও মামা দিয়া হোসেন পরশ। মায়ের কোল কিংবা মমতার হাহাকার নিয়ে বাবার কোলেই ঘুমায় আনহার।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নওরোজ আফরিন প্রিয়া খুন হওয়ার সময় মায়ের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল শিশু আনহার। কোন কিছু বুঝার বা প্রকাশের ক্ষমতা না থাকলেও কোমলমতি হৃদয়ে মায়ের জন্য শুধুই হাহাকার। পিতা ও মামা মিলে দেখভালের দায়িত্ব নিলেও মায়ের শূন্যতায় ক্ষণে ক্ষণে কেঁদে উঠে শিশুটি। খাওয়ার সময় হলে এদিক ওদিক মাকে খোঁজে আনহার।
সরেজমিনে শনিবার ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রিয়ার বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের শুধুই ব্যস্ততা মায়ের মমতার অভাব থেকে আনহারকে দুরে রাখার।
প্রিয়ার ছোট ভাই দিয়া হোসেন পরশ জানান, সবাই সারাক্ষণ আনহারকে কোলে নিয়ে মায়ের অভাব পূরন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে শিশুটিকে কৌটার দুধ খাওয়ানো হচ্ছে।
প্রিয়ার স্বামী কাইরুজ্জামান হৃদয় চৌধুরী জানান, প্রিয়ার মৃত্যুর পর আনহার নানীর কাছে থাকতো। তিনি কারাগারে চলে যাওয়ার পর নিজেই সন্তানের দেখাশুনা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়নের আহাম্মদ নগর ছোটপোদ্দার বাড়িতে নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
সে ওই বাড়ীর প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের একমাত্র মেয়ে।
ঘটনার পরদিন প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি শাহরাস্তি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি, তার পরকীয়া প্রেমিক আঃ হান্নানের পরিকল্পনায় আরও দুজনে মিলে প্রিয়া হত্যাকান্ড সংগঠিত করেছেন মর্মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।