নিজস্ব প্রতিবেদক: এক দিনে
দেশে আরও তিন হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় এ
পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল। এেই সংখ্যা ১৪ লাখ
ছড়িয়েছিল গত ১৩ অগাস্ট। অর্থাৎ, সর্বশেষ এক লাখ নতুন রোগী শনাক্ত হতে সময়
লেগেছে ১৮ দিন। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ থেকে ১৪ লাখে পৌঁছাতে সময়
লেগেছিল ৯ দিন। অর্থাৎ সংক্রমণের গতি এখন অনেকটা ধীর হয়ে এসেছে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজারের বেশি
নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার ৩৫৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে আরও ৮৬ জনের।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত
শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ লাখ ৬১৮ জনে। তাদের মধ্যে ২৬ হাজার ১৯৫
জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায়
শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশে; এই হার আগের দিন ১২ দশমিক ০৭
শতাংশ ছিল।
আগের দিন সোমবার সারা দেশে ৩ হাজার ৭২৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত
হয়, মৃত্যু হয় ৯৪ জনের। সেই হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীর আর
মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই কমেছে।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ২ হাজার ১২৪
জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর এই সময়ে যে ৮৬ জন মারা গেছেন, তাদের ২২
জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন আরও ১৯ জন।
সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন আর ৪ হাজার ১০২ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৫ জন সুস্থ হলেন।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা
ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করে এসে তা ১৫ লাখ পেরিয়ে
গেল মঙ্গলবার। এর আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম
মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার
ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা
মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ৯৭টি নমুনা পরীক্ষা
হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৫টি নমুনা।
নমুনা
পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এ পর্যন্ত
শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
গত
একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের ঢাকা ২২ জন ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম
বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১২ জন, খুলনা বিভাগে ১৫ জন, বরিশাল ও
ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন করে মোট ৪ জন, সিলেট বিভাগে ৯ জন এবং রংপুর বিভাগে ৫
জন বাসিন্দা ছিলেন।
মৃত ৮৬ জনের মধ্যে ৫৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি,
১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৬
জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১
জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
তাদের মধ্যে ৪৪ জন ছিলেন পুরুষ, ৪২ জন ছিলেন
নারী। ৭৪ জন সরকারি হাসপাতালে, ১১ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায়
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ২৬ হাজার ১৯৫ জনের মধ্যে ১৬ হাজার ৯৮৭ জন ছিলেন পুরুষ আর নারী ছিলেন ৯ হাজার ২০৮ জন।