আফগানিস্তানকে চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০-এর নেতারা। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, দেশটিকে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে দেওয়া ঠিক হবে না।
আফগান অর্থনীতি রক্ষায় শত কোটি ডলার দিতে জাতিসংঘ আহ্বান জানানোর পর মঙ্গলবার বিশ্বনেতারা একটি ভার্চুয়াল সামিটে অংশ নেন। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন, যেসব সাহায্য দেওয়া হবে, তা দিতে হবে স্বাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে, সরাসরি তালেবানের হাতে নয়।
এখন পর্যন্ত যতটুকু অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে সেটি মূলত জরুরি খাদ্য ও ওষুধের জন্য দেওয়া হচ্ছে।
এমন সময়ে আফগানিস্তান ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে যখন দাতব্য কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, দেশটিতে বড় ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে।
নতুন প্রতিশ্রুতির মধ্যে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেছেন, আফগানিস্তান এবং প্রতিবেশী যেসব দেশ শরণার্থীদের গ্রহণ করছে, তাদের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেকলা ম্যার্কেল দেশটির গত মাসের নির্বাচনে অংশ নেননি। ফলে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর তাকে সরে যেতে হবে। তবে তিনি আফগানিস্তানের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পুরো আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা আর্থিক পদ্ধতি যদি ভেঙ্গে পড়ে, তাহলে আমাদের কারও কোনও উপকারই হবে না। তখন আর মানবিক সহায়তাও দেওয়া যাবে না। আসলে সীমারেখা টানা সহজ নয়। কিন্তু চার কোটি মানুষ যদি বিদ্যুৎ না থাকা বা আর্থিক পদ্ধতি ভেঙ্গে পড়ার কারণে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে, সেটা তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের লক্ষ্য হতে পারে না।’
আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বক্তব্যের সঙ্গে একমত জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি, যিনি এই ভার্চুয়াল সামিটের আয়োজন করেছিলেন। তিনি বলেন, তালেবানের সঙ্গে জি-২০ দেশগুলোর যোগাযোগ করতে হবে। তবে এই যোগাযোগের মানে দলটির নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থী সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়।
ভার্চুয়াল এই সামিটে জি-২০ দেশগুলোর সব সদস্য উপস্থিত ছিল না। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে তাদের প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন। তবে দ্রাঘি বলেছেন, বৈঠকে অংশ নেওয়া সব সদস্যই আরও বেশি সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।
আফগানিস্তান যাতে আল কায়েদা বা আইএস-এর মতো জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত না হয়, সেটি নিশ্চিতের ব্যাপারেও আলোচনা করেছেন বিশ্বনেতারা। সেই সঙ্গে বিদেশি নাগরিক এবং দেশ ছাড়তে আগ্রহী আফগানদের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি।