Published : Wednesday, 27 October, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.10.2021 1:37:27 AM
নিজস্ব
প্রতিবদক: কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা, হিন্দুদের পূজামণ্ডপ ভাংচুর ও মন্দিরে
হামলার ঘটনায় কুমিল্লার কোতয়ালী, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার
থানায় পৃথক ১১ টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি মামলা কুমিল্লা কোতয়ালী থানায়,
২টি সদর দক্ষিণ থানায়, দাউদকান্দিতে ১ টি ও দেবিদ্বারে ১টি । এসব মামলায়
মোট অন্তত ৭২ জন গ্রেপ্তার রয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
কোতয়ালী
মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম জানান, সহিংসতার ঘটনায়
কুমিল্লায় নিহত দিলীপ দাসের স্ত্রী রূপা দাস গত ২৪ অক্টোবর কোতয়ালী থানায়
অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি মামলাটি করেন। এছাড়া ২৪ অক্টোবর কোতয়ালী থানায়
মন্ডপে হামলার ঘটনায় আরো একটি মামলা দায়ের হয়। এ নিয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী
থানায় মোট ৭ টি মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে কুমিল্লার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের
করা ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সায়েদুল আরেফিন জানান, অতিরিক্ত নেয়া ১৫ দিন
কার্যদিবসে তদন্ত কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী প্রতিবেদন
জমা দেয়ার সময় বাড়তে পারে।
এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ ও আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী
কর্মর্কতা জাকিয়া আফরিন। ১৩ অক্টোবর বিশৃঙ্খলার পরদিন ১৪ অক্টোবর জেলা
প্রশাসন এই কমিটি গঠন করে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা
দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে অতিরিক্ত আরো ১৫
কার্যদিবস সময় দেয়া হয় কমিটিকে।
এদিকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র
কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের মামলার নথি
অনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা
হয়েছে।
পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান বলেন, পবিত্র কোরআন অবমাননার
মামলাটি গত ২৪ অক্টোবর রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তের জন্য
সিআইডিকে দেওয়া হয়। সে আলোকে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় মামলার সব ডকুমেন্ট
অনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে দুইটি
মামলা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করেছি। যাতে ঘটনার গভীরে যাওয়া যায় এবং
ইকবালের ইন্ধনদাতা ও জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে
সিআইডি।
এছাড়া পূজা মন্ডপের ঘটনায় আইসিটি আইনে আরো একটি মামলারও তদন্ত
করছে সিআইডি। এই মামলাটিতে ঘটনাটি প্রথম লাইভ করা যুবক ফয়েজ আহমেদ
গ্রেপ্তার রয়েছে।
গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড় পূজামণ্ডপে
পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরীর কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও
অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী,
রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
পরে পুলিশের সংগ্রহকৃত সিসিটিভির ফুটেজের মাধ্যমে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা
প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে গত ২১ অক্টোবর অভিযুক্ত
ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২২ অক্টোবর তাকে কুমিল্লা এনে
২৩ অক্টোবর আদালতে হাজির করা হলে আদালত ইকবাল, মাজারের দুই খাদেম ও ৯৯৯-এ
কল করা ইকরামকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।