ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে দিতে ডেকে প্রেমিককে হত্যা
Published : Sunday, 31 October, 2021 at 6:46 PM, Update: 31.10.2021 6:56:17 PM
সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে দিতে ডেকে প্রেমিককে হত্যাস্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে চট্টগ্রাম আসার পথে পিকআপচালক সজীবের সঙ্গে পরিচয় হয় ফারহানার (ছদ্মনাম)। পরিচয়ের সূত্রে দুই জনের বন্ধুত্ব। এরপর প্রেমের সম্পর্ক। কয়েক মাসের মধ্যে ফারহানাকে স্ত্রী হিসেবে পেতে চান সজীব। অন্যদিকে স্বামী নুরুল আমিন স্ত্রী ফারহানাকে সংসারে ফেরাতে চান। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান সজীব। তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নুরুল। প্রথমে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় দফায় স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে দিতে ডেকে সহযোগীদের নিয়ে সজীবকে হত্যা করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলী টোল রোড এলাকায়। গত ২৭ অক্টোবর টোল রোড়ের পূর্বদিকে স্থানীয় সেকান্দারের কৃষিজমিতে একজনের লাশ দেখে থানায় খবর দিলে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। লাশটি নোয়াখালীর চাটখিল থানার ভিমপুর আমজাদ বেপারি বাড়ির আব্দুল হক স্বপনের ছেলে মো. সজীবের (২৭)।

এ ঘটনায় সজীবের ভাই ইকবাল হোসেন মামলা করলে তদন্ত করতে গিয়ে এসব তথ্য পায় পুলিশ। ফারহানা নামের ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের কারণে সজীবকে হত্যা করেন স্বামী নুরুল আমিন।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে নুরুল আমিনকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রবিবার (৩১ অক্টোবর) নুরুল আমিন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের তিন দিনের মাথায় আমরা পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি খুনিকে গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতার নুরুল আমিন রবিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে সজীবকে হত্যা করেন বলে স্বীকার করেছেন নুরুল আমিন। এই কাজে তাকে সহযোগী শাহজাহানসহ তিন জন সহযোগিতা করেছেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে নাইমা সুলতানা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল জানান সজীব পিকআপচালক। নুরুল টাইলস শ্রমিক এবং স্ত্রী ফারহানা পোশাককর্মী। তারা চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। করোনায় দ্বিতীয়বার লকডাউনের সময় আর্থিক অনটনে স্বামী-স্ত্রী হবিগঞ্জে গ্রামের বাড়ি চলে যান। 

গ্রামে যাওয়ার পর পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে নুরুল স্ত্রীকে মারধর করলে চট্টগ্রাম আসার জন্য ঘর ছাড়েন। পিকআপযোগে চট্টগ্রামে রওনা হন স্ত্রী। পথে পিকআপচালক সজীবের সঙ্গে পরিচয় হয়। 

পরিচয়ের পর থেকে সজীবের সঙ্গে ফারহানার মোবাইল ফোনে কথা হতো। বিষয়টি জানার পর নুরুল আমিনের সঙ্গে ফারহানার তালাক হয়। পরে সজীবের সঙ্গে ফারহানার ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। অন্যদিকে নুরুল আমিন তালাক দেওয়া স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করতে চাপ দেন। এতে ফারহানা রাজি না হলে নুরুল নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিতেন। অন্যদিকে সজীবও ফারহানাকে পেতে চান। 

তিনি আরও বলেন, সজীবের বিষয়টি সহযোগী শাহজাহানকে জানান নুরুল।  সজীবকে হত্যায় সহযোগিতার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে নুরুলকে টাকা দিতে রাজি হন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সজীবকে ফারহানার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টোল রোড এলাকায় নিয়ে যান। এরপর ধানক্ষেতের দিকে নিয়ে গেলে সজীব বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পালানোর চেষ্টা করলে নুরুল জাপটে ধরেন। পরে শাহজাহানসহ অপর দুই জন তার বুকের ওপর চড়ে বসেন। নুরুল শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে সবাই পালিয়ে যান।