ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
নাঙ্গলকোটে বৃদ্ধা জবা হত্যার রহস্য উন্মোচন একমাত্র আসামি গ্রেপ্তার
Published : Monday, 1 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 01.11.2021 1:48:17 AM
নাঙ্গলকোটে বৃদ্ধা জবা হত্যার রহস্য উন্মোচন একমাত্র আসামি গ্রেপ্তারকুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বৃদ্ধা জবা বেগমের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত একমাত্র আসামি খোরশেদ আলমকে (২৫)। অভিযুক্ত খোরশেদ নাঙ্গলকোটের সিজিরিয়া গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের পুত্র। ৩১ অক্টোবর রবিবার সকালে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এর আগে গত ২৫ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে খুন হন জবাব বেগম। পরদিন ২৬ অক্টোবর সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
র‌্যাব জানায়, গত ২৬ অক্টোবর সকালে নাঙ্গলকোট থানাধীন চান্দলা এলাকায় ভিকটিমের ছোট ছেলের স্ত্রী স্বপ্না বেগম তার শাশুড়ী জবা বেগমকে (৭৫) তার নিজ ঘরে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে ২৭ অক্টোবর অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে নাঙ্গলকোট থাানায় মামলা হয়। বিষয়টি র‌্যাব-১১ কুমিল্লা’র নজরে আসলে ছায়া তদন্ত ও হত্যা কান্ডের রহস্য উৎঘাটনে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব কুমিল্লার একটি অভিযানিক দল ৩১ অক্টোবর সকালে অভিযান পরিচালনা করে নাঙ্গলকোট থানার সিজিয়ারা গ্রাম থেকে মোঃ খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ খোরশেদ আলম জানায়, সে ভিকটিমকে নানী বলে সম্বোধন করত। ঘটনার দিন বিকালে ভিকটিম আসামী মোঃ খোরশেদ আলমকে নারিকেল বিক্রির জন্য প্রস্তাব দিলে আসামী ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে নারিকেল দেখে তাকে প্রতিটি নারিকেল ৩০ টাকা করে দিবে বলে জানালেও ভিকটিম প্রতিটি নারিকেল ৪০ টাকা করে চাহিদা দেয়। তখন ভিকটিমের ঘরের ভিতর বিভিন্ন দামী আসবাবপত্র ও লকার দেখে তার ভিতর লোভের সৃষ্টি হয় এবং সে পুনরায় এসে নারিকেলের দরদাম করে এবং কৌশলে তার ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র সমূহ পর্যবেক্ষণ করে চলে যায়। পুনরায় তৃতীয় বার ভিকটিমের ঘরে আসে এবং ভিকটিম নারিকেল যে দামে বিক্রি করতে চেয়েছিল সেই দামে নারিকেল ক্রয় করতে আসামি রাজি হয় এবং কৌশলে ভিকটিমের অজান্তে বসত ঘরের পূর্ব পার্শ্বের উত্তরের দরজা খুলে চলে যায়। পরবতীতে ভিকটিম ঘুমিয়ে পরলে আসামীর পরিকল্পনা মোতাবেক মধ্যরাতে পূনরায় আসামী ভিকটিমের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র খোজাখুজি করে আলমারিতে রাখা নগদ মাত্র ২৫০০ টাকা পায়। কিন্তুু আসামির ধারনা ছিল সে অনেক টাকা স্বর্নালংকার পাবে। কারন ভিকটিমের চার ছেলে প্রবাসী, অন্য ছেলে দেশে ভালো চাকুরি করে। ইতোমধ্যে ভিকটিম ঘরের মধ্যে আসামীর উপস্থিতি টের পায়। তখন আসামীর পালিয়ে যাবার সুযোগ থাকলেও আসামীর আশানারুপ মালমাল না পাওযায় বৃদ্ধ মহিলাকে চাকু দ্বারা গলায় পোচ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যান্ত ভিকটিমের ঘরে অবস্থান করে ।  পরবর্তীতে আসামী আলমারিতে রাখা নগদ ২৫০০ টাকা,  ভিকটিমের ব্যবহৃত ২টি মোবাইল,  ভিকটিমের হাতে  থাকা স্বর্নের আংটি, নাকফুল ও কানের দুল খুলে নিয়ে ভিকটিমের ঘর থেকে চলে যায় এবং যাবার সময় প্রচলিত পথ ব্যবহার না করে রেললাইনের পথ ধরে  আসামী তার  নিজ বাড়িতে  গমন করে।
র‌্যাব-১১ কুমিল্লার উপপরিচালক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশানুরুপ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার না পাওয়ায় ও চুরির সময় ভিকটিম তার উপস্থিতি বুঝতে পারায়সে নিজেই উক্ত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চোরাইকৃত স্বর্ন অলংকার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।