নানা অযুহাতে গাড়ি বন্ধে যাত্রীদের ক্ষোভ
Published : Monday, 8 November, 2021 at 12:00 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর:
জ্বালানি
তেল ডিজেল কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক পক্ষের ডাকা
অঘোষিত ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ওই অঘোষিত ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও
ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ছিলো না যাত্রীবাহী বাস।
জরুরী
প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে পথে পথে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
বাসের পরিবর্তে লেগুনা, মাইক্রোবাস ও মারুতিতে তিনগুন ভাড়ায় যাতায়াত করতে
হচ্ছে যাত্রীদের। ভোগান্তির শিকার হয়ে যাত্রীরা দোষছেন দেশের
নীতি-নির্ধারকদের।
রবিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকায় যাত্রীদের সাথে আলাপ কালে শোনা যায় তাদের
দুর্ভোগের কথা।
কলেজ যাত্রী রুনা আক্তার। চান্দিনার বরকইট গ্রামের
বাড়ি তার। বিএসসি নার্সিংয়ে ভর্তির জন্য কুমিল্লার একটি প্রাইভেট মেডিকেল
যান তিনি। রবিবার দুপুরে মারুতি থেকে নামেন ওই ছাত্রী। বাস ছাড়া যাতায়াত
সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘এই দেশে কি কোন আইন
নাই? রাজনীতি নিয়া লাগুক আর ডিজেল নিয়াই লাগুক কোন অযুহাত পাইলেই গাড়ি
বন্ধ! জনগনের কথা কেউ চিন্তা করে না! মানুষের যে কত সমস্যা হইতাছে কেউ দেখে
না!
আজ সকালে আমি কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। চান্দিনা থেকে
কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পৌঁছেছি তিন গাড়ি বদল করে ৩০ টাকার ভাড়ার জায়গায়
৮০ টাকা খরচ করি। আর পায়ে হাটা তো আছেই।
অপর যাত্রী ফেরদৌসী বেগম
জানান, বাস না থাকায় বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে যাতায়াত খুব কষ্টের। বাস বন্ধের
কারণে মারুতি-মাইক্রোবাসে আগের চেয়ে তিনগুন ভাড়া বেশি নেয়। আগে চান্দিনা
থেকে নিমসার ১০ টাকা নিতো, এখন ৩০ টাকা নেয়।
ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিব
দাশ জানান, আমার বাসা কুমিল্লা শহরে। প্রতিদিন বাস যোগে চান্দিনায় এসে অফিস
করি। আমার মতো এমন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, যারা প্রতিদিন ২০-৫০
কিলোমিটার দূরত্বে যাতায়াত করে অফিস করেন। কোন কিছু হলেই যে গাড়ি চলাচল
বন্ধ করে দেন, তারা কি একবারও চিন্তা করেন না লক্ষ লক্ষ মানুষের কি অবস্থা
হবে? এমন কালচার থেকে জাতি কবে মুক্তি পাবে?
মাইক্রোবাস চালক মিজানুর
রহমান জানান, রোডে বাস চলাচল করার সময় যে মাইক্রোবাস বা মারুতি ছিল, এখন
বন্ধ থাকার পরও একই আছে। অনেক যাত্রীরা মাইক্রোবাস রিজার্ভ নিয়া দূরে নিয়া
যায়। যে কারণে যাত্রীর চাপ অতিরিক্ত বাড়ায় ভাড়া বাড়াইয়া দিছে ড্রাইভাররা।
এদিকে,
অঘোষিত ধর্ম ঘটের তৃতীয় দিনেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পণ্যবাহী যান চলাচল
স্বাভাবিক ছিল। মাঝে মধ্যে চলেছে দূর পাল্লার বাসও।
কুমিল্লা বাস
মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ জানান, আমরা তো কোন ধর্মঘট ডাকিনি।
জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধিতে আমরা মালিকরা গাড়ি চালাচ্ছি না।
যারা গাড়ি চালাচ্ছে তাদেরকে আমরা বাধাও দিচ্ছি না। যেগুলো চলছে অবশ্যই
অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। বিশেষ করে পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা
করে হয়তো কিছু কিছু মালিক গাড়ি চালাচ্ছেন।