১২ বছর পর নিজস্ব ভবনে দেবিদ্বার পৌরসভা
Published : Thursday, 25 November, 2021 at 12:00 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার।
দীর্ঘ ১২ বছর পর নিজস্ব ভবনে ফিরে গেল দেবিদ্বার পৌরসভা। গতকাল বুধবার প্রথম কর্মদিবস করেন পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বুধবার সকালে জীর্ণ দ্বিতল ভবনটি ধোয়া মোছাসহ দরজা জানালা আসবাবপত্র মেরামত করতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন এ ভবনে পৌর কার্যক্রম পরিচালনা না করায় এক প্রকার পরিত্যক্ত ছিলো ভবনটি।
নতুন ভবনে ফিরে যাওয়ায় খুশি পৌরসভার স্থানীয় বাসিন্দরাও। পৌরসভার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান, জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন বলেন, অস্থায়ী কার্যালয়ে যেয়ে জায়গা সংকটে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এছাড়াও জন্মনিবন্ধন, কর পরিশোধ করতে যেয়েও নারী পুরুষের প্রচুর ভীর লেগে থাকত। পৌসসভা নিজস্ব ভবনে ফিরে যাওয়ায় মানুষের অনেক কষ্ট কমবে।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার জন্য গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় এক কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক দ্বিতল পৌর ভবনটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর সেখানে পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয়। এবং টানা পাঁচ বছর কার্যক্রম চলে। কিন্তু পৌর ভবনটি পৌর এলাকার এক প্রান্তে হওয়ায় যাতায়াত সমস্যাসহ নাগরিক সেবায় অসুবিধার অজুহাতে ২০০৯ সালে এটি তালাবদ্ধ রেখে ‘দেবিদ্বার মাজেদা আহসান মুন্সী পৌর গণপাঠাগার’কে পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় বানিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এতে পাঠাগারের কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। পাঠাগারের লাখ লাখ টাকার বই লোপাট হতে শুরু করে। বর্তমানে পাঠাগারের নামে নতুন করে সরকারি অনুদানসহ বইপত্র আসা বন্ধ রয়েছে। ফলে বইপ্রেমীরা জ্ঞানান্বেষণের একমাত্র পাঠাগারটির কথা ভুলতে বসেছে।
কয়েকজন পৌরবাসী বলেন, দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিলো ভবনটি। স্থানীয়রা ভবন প্রাঙ্গণে গরু-ছাগল লালন-পালন করছে। খড়কুটা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভবন এলাকা মাদকাসক্ত ও বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। নতুন করে এ ভবনে কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
পৌর সচিব মো.ফখরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার নিজস্ব ভবনে ফিরে আসায় আমাদের কাজের অনেক সুবিধা হয়েছে। নাগরিক সেবার মানও বেড়েছে। আগে ছোট্ট তিনটি রুমে একাধিক কর্মকর্তা বসতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের চাপও ছিলো। এখন মানুষ সহজেই সব কাজ করতে পারবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশিক উন নবী তালুকদার বলেন, পৌরবাসীর নাগরিক সেবার মান বাড়াতে পৌরসভার নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বলা হয়েছে। এ জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহম্মদ ফখরুল আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ বছরেও দেবিদ্বার পৌরসভার নির্বাচন হয়নি। সীমানাসংক্রান্ত নানা জটিলতায় উচ্চ আদালতে দুটি মামলা থাকায় নির্বাচিত মেয়র থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী। ফলে পৌরবাসীর সেবা লাভের একমাত্র ভরসা হচ্ছেন পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ অবস্থায় পৌর এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।