Published : Tuesday, 30 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 30.11.2021 3:46:31 AM
স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লা
শহরের সংরাইশে গোমতী নদীর বেরিবাঁধের উপর পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সাথে
গোলাগুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহত দুইজন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের
প্যানেল মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোঃ সোহেলসহ দুই হত্যা মামলার আসামি।
এদের একজন সাব্বির হোসেন (২৮) ও অন্যজন সাজন (৩২)।
গতকাল সোমবার
দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার
ইনচার্জ আনোয়ারুল আজিম সন্ত্রাসীদের সাথে গোলাগুলি হয়েছে বলে জানান। তিনি
জানান, এসময় দুইজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের পরিচয়ও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে জানেন না বলে
জানান।
জানা গেছে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রাত
১টা ৩৩ মিনিটে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই নুরুল আলম দুইজন আহত অজ্ঞাত যুবককে
নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে তথ্য
জানতে চাইলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক কামরুল মিল্লাত মঙ্গলবার সকালে
হাসপাতালের পরিচালকের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান।
হাসপাতালের
জরুরী বিভাগের নিবন্ধন খাতায় একজন অজ্ঞাত পুরুষের নামের পাশে সাব্বির হোসেন
ও আরেকজন অজ্ঞাত পুরুষের পাশে সাজন লেখা আছে।
সাব্বির হোসেন কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র সোহেলসহ জোড়া খুনের মামলায় ৩ নম্বর
আসামি। তার পিতার নাম রফিক মিয়া। বাড়ি সুজানগর পানির ট্যাঙ্কির পাশে।
আরেকজন সাজন একই মামলার ৫ নম্বর আসামি। তার পিতার নাম কাকন মিয়া। সংরাইস
রহিম ডাক্তারের গলিতে তার বাড়ি।
জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাত সোয়া
১২টার দিকে পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১৭
নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ রায়ের হত্যা মামলার
এজহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা সংরাইশ এবং নবগ্রাম এলাকায় অবস্থান
করছে। সংবাদ পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা এবং ডিবি পুলিশের একাধিক টিম আসামিদের
গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা শুরু করে।
রাত আনুমানিক ১২টা ৪৫
মিনিটে কোতয়ালি থানার বালুমহল সংলগ্ন সংরাইশ গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের নিকটে
ডিবি ও থানা পুলিশের টিম পৌঁছালে আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি
গুলি করতে থাকে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে
পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী পালিয়ে
যায়। গুলিবর্ষণ শেষে ঘটনাস্থলে দুইজন ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে
থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসিদের ছোড়া গুলিতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়। আহত
পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল
তল্লাশি করে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি ৭.৬৫ পিস্তল, একটি পাইপ গান,
পিস্তলের অব্যবহৃত গুলি, গুলির খোসা এবং কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় জনতা, কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ রায়ের হত্যা মামলার
এজহার নামীয় আসামীদের দেখে মৃত এক জনের নাম সাজেন (এজহারনামীয় ৫ নং আসামী)
এবং অপরজনের নাম সাব্বির (এজহারনামীয় ৩ নং আসামী) বলে সনাক্ত করে। সরকারি
কাজে বাধা, হত্যা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্তে পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে
মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।