Published : Thursday, 2 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 02.12.2021 12:03:25 AM
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদে টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবং তৃতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন সৎ,মেধাবী দক্ষিন জেলা যুবলীগের নেতা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শাহজালাল মজুমদার।
সোমবার(২৯নভেম্বর)বিকালে মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে শাহ জালাল মজুমদারের মনোনয়ন ফরমটি বৈধ বলে তথ্যটি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ।
আসন্ন ২৬ই ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ১২ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।এ নির্বাচনে অংশ নিতে গত ২৫ নভেম্বর উপজেলার ৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের একক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তিনি।
জানা যায়,যুবলীগ নেতা মাত্র ২৭ বছর বয়সে ২০০৩ সালে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নির্বাচন না থাকলেও দলীয়ভাবে সমর্থণ থাকায় তার তুমুল জপ্রিয়তা থাকার পরও বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা ভোটের দিন সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পথে তার উপর অতর্কিত হামলা করে এসময় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে তার চাচা জহিরুল কাইয়ূম মজুমদারের একটি হাত শরীর থেকে বিছিন্ন হয়ে যায়। পরে তিনি সন্ত্রাসীদের এমন তান্ডবের কারণে নির্বাচন বয়কট করেন। তিনি নির্বাচন বয়কট করলেও তার বিপুল সর্মথন ও জনপ্রিয়তার কারণে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলেও তিনি ৫টি কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ওই নির্বাচনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন জয়ীহন বিএনপি জামাত সমর্থিত প্রার্থী এমদাদুল হক শাহী।
পরবর্তীতে ২০১১ পুণরায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগে সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন যুবলীগ নেতা শাহ জালাল মজুমদার । ওই নির্বাচনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান মোস্তফা নূরুজ্জামান খোকন। ওই নির্বাচনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে জামানত হারান দুইবারের চেয়ারম্যান মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন। তাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ২০১১ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তরুন যুবলীগ নেতা শাহ জালাল মজুমদার।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরাসরি প্রর্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কর্তৃক দলীয়ভাবে নৌকা প্রতীক নিয়ে আবারো নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন শাহ জালাল মজুমদার।সেই বছর তার সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য কোন প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায়য় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা দেয় এবারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তৃণমূলের কর্মীদের মতামত নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীও নাম কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এই নিদের্শনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চৌদ্দগ্রাম থেকে বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুজিবুল হক মুজিব এমপি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার প্রত্যাক ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে বর্ধিত সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরইধারবাহিকতায় শ্রীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয় ১৩ নভেম্বর। ওইদিন বর্ধিত সভায় ইউনিয় আওয়ামী লীগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের উন্মুক্ত মতামত নেন। ওই বর্ধিত সভায় ৫জন প্রার্থী দলের নিকট নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার আবেদন করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সোবহান ভূইয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত মতামত প্রকাশে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা শাহজালাল মজুমদারের নাম সমর্থন করে। তাকে পূণরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার আবেদন করেন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক সিদ্ধান্ত হয়ে যুবলীগ নেতা শাহ জালাল মজুমদারকে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট তার নাম পাঠানো হয়। বাংলাদেশ আওয়মী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট আর কোন নামের প্রস্তাব না যাওয়ায় একক ভাবে শাহ জালাল মজুমদারকে দ্বিতীয় বারের মতো নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়।
গত২৫ নভেম্বর ৪র্থ ধাপের মনোনয়ন পত্র জমাদেয়ার শেষ দিনে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তরুন যুবলীগ নেতা শাহ জালাল মজুমদার ব্যতীত অন্যকোন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল না করায় দ্বিতীয় বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ৩য় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পথে তিনি।
এই বিষয়ে শাহজালাল মজুমদার বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি এবং আমার পিতা মাতার পর আমি যাকে আমার অভিবাবক হিসেবে মেনে রাজনীতি করি আমার প্রিয় নেতা সাবেক সফল রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি‘র নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এছাড়াও আমার প্রিয় শ্রীপুর ইউনিয়ন বাসী ও আমার শ্রদ্ধাভাজন মরহুম পিতা সুজত আলী মজুমদার ও আমার মাতা আংকুরের নেছার দোয়া আমাকে তৃতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমি রাজনীতিতে একটি বিষয় বিশ্বাস করি যা হলো প্রতিহিংসা কোনদিন মানুষকে উন্নতির সাফল্যোর স্বর্ণশিখড়ে নিয়ে যেতে পারেনা ধৈর্য্য পারে। কারণ ২০০৩ সালে আমার প্রথম নির্বাচনে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা আমার চাচার একটি হাত কেটে ফেলে দেয়ার পর আমি কোন মামলা করিনি আমি আমার কাজ করে গেছি মানুষের পাশে থেকেছি। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি যার প্রমাণ হিসেবে আমি দেখেছি আমার কর্মীরা আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার কর্মীরা আমাকে এবার উপজেলা আওয়ামী লীগের উন্মুক্ত বর্ধিত সভায় অন্যকারো পক্ষে সমর্থণ না দিয়ে শতভাগ আমার পক্ষে সমর্থণ দিয়েছে। আমি মনে করি এটিও আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি।