শাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
বঙ্গোপসাগরে
সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা ৩দিনের বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির
কারণে জেলার দেবিদ্বারে কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দুই হাজার ৭৯৩ হেক্টর আগাম রবি শস্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে জানায় স্থানীয়
কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, কৃষকের আগাম আলু ও শাক-সবজি জমি
বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে
নেওয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
গত শনিবার
বিকালে উপজেলার মোহনপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিপাতে ভাসছে
কৃষকের আমন ধান, সবজি ক্ষেত। তলিয়ে গেছে বোরো ধানের আগাম বীজতলা, আলু ও
মসুর ক্ষেত। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে না বলে জানালের স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষক রফিকুল ইসলাম ৭০ শতাংশ জমিতে গোলআলু এবং ২০ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন
শাক-সবজি চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু
হঠাৎ বৃষ্টিতে বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেষে শেষ। জমির পানি সরানো না গেলে
আলুর বীজ ক্ষেতেই পঁচে যাবে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠা অনেক অর্থ ব্যয় হবে।
মোহনপুর
ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. বারেক মির্জা, মো. আলী হোসেন, মো. নাজমুল
হাসান, মো. রুবেল মির্জা বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তারা
মাঠে এবার প্রায় দুই একর জমিতে আলু চাষ, এক একর জমিতে ফুল কপি ও দুই একর
জমিতে মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করেছিলেন। তিনদিনের টানাবর্ষণে সবই
এখন পানির নিচে। আমরা ক্ষুদ্র কৃষক, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবাদ
করেছি।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি
মৌসুমে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু ও নানা রকমের ৭৫০ হেক্টর সবজী
আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে মুলা ৫৬ হেক্টর, লালশাক ৭৫ হেক্টর, ডাটা ৫৪
হেক্টর, লাউ ৭০ হেক্টর, ফুলকপি ৯৬ হেক্টর, বাধাকপি ৬০হেক্টর, টমেটো-
৮০হেক্টর, পালং শাক ২৫ হেক্টর, শসা ২৫ হেক্টর, করলা ৩০ হেক্টর, দেঢ়শ ৩৬
হেক্টর, কাঁচা মরিচ- ৬৫ হেক্টর, ধনিয়া পাতা- ৮৫ হেক্টর, পেঁয়াজ- ২০ হেক্টর,
রসুন-১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু- ১৫ হেক্টর ও ১২ টি বিষমুক্ত সবজির প্রদর্শনী
সহ ২হাজার ৭শ’ ৯৩ হেক্টর জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ
ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ জানান,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে টানা বৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে আবাদী ফসলের
ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলায় প্রায় দুই হাজার ৭৯৩ হেক্টর কৃষি জমি
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জমিতে পানি আটকে থাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ভর্তুকির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।