রণবীর
ঘোষ কিংকর: রাত পোহালেই ভোট। নির্বাচনী বিধি মোতাবেক সোমবার (৩ জানুয়ারী)
রাত ১২টার পর থেকে প্রার্থীদের সকল প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়। শেষ মুহুর্তে
ভোটের হিসাব নিকাশ চূড়ান্ত ভাবে কষছে ভোটররা। প্রার্থীরাও গোপনে ভোটার
বাগিয়ে আনতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। উপজেলা জুড়ে ভোটারদের মতামতে ১২টি
ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ ইউনিয়নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীকেই এগিয়ে রাখছেন তারা ।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সারা দেশের অধিকাংশ ইউনিয়নেই অবাধ,
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে বলে
মন্তব্য করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া
কুমিল্লার চান্দিনার ১২টি ইউনিয়নেও সক্রিয় অংশ গ্রহণ করছে বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগসহ ৪টি রাজনৈতিক দলের ২৫জন প্রার্থী। এছাড়া ৫১জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর
মধ্যে অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, এলডিপি সমর্থিত অন্তত ৩০ প্রার্থী।
উপজেলার
১২টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ইউনিয়নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের
জয়জয়কার। হাতে গোনা ২/৪টি ইউনিয়ন ছাড়া বাকিগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের
সমর্থনে ভোটাদের মতামত উল্লেখযোগ্য ভাবে চোখে পড়েনি।
উপজেলার ১নং
শুহিলপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ ৭জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ওই
ইউনিয়নে জনমত জরিপে অনেকটা এগিয়ে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সরকার
(নৌকা), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র রফিউদ্দিন (চশমা)।
২নং
বাতাঘাসী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ১০জন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন উপজেলা লিবারেল
ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান
সিরাজ (টেবিল ফ্যান)।
৩নং মাধাইয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন
বাংলাদেশসহ ৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জনমত জরিপে
হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে আছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মজিবুর রহমান (নৌকা)
ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান অহিদ
উল্লাহ (আনারস)।
৫নং কেরণখাল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীসহ
৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান
হারুন অর রশিদ (নৌকা)। কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী
স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন ভূইয়া (আনারস)।
৬নং বাড়েরা ইউনিয়নে আওয়ামী
লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ওই
ইউনিয়নে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এলডিপি নেতা ও
সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন কালা (ঘোড়া)।
৭নং এতবারপুর ইউনিয়নে
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীসহ ৫জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জনমত জরিপে
এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইউসুফ (আনারস)।
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান
একেএম মামুনুর রশিদ (নৌকা)।
৮নং বরকইট ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,
জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থীসহ ৯জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জনমত
জরিপে এগিয়ে আছেন সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম (ঘোড়া),
আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল বাসার
(আনারস)।
৯নং মাইজখার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ
৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ভোট যুদ্ধের
হাড্ডাহাড্ডি লড়ায়ে আছেন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ্
সেলিম প্রধান (আনারস) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আওয়ামী লীগ প্রার্থী
জামাল উদ্দিন (নৌকা)।
১০নং গল্লাই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ
কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৭জন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ
বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম
(চশমা)।
১১নং দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট
পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তাদের মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক নেতা ও সাবেক
চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া (চশমা)।
১২নং বরকরই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগসহ
রয়েছে মাত্র ৩জন প্রার্থী। ওই তিন প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়ায়ে
আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মজুমদার শিপন
(নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম চৌধুরী রতন
(ঘোড়া)।
১৩নং জোয়াগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৫জন
প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবু তাহের
ভূইয়া (ঘোড়া)।
আগামীকাল ৫ জানুয়ারী চান্দিনার ১২টি ইউনিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।